বাংলাদেশ শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
টিআইবির বিবৃতি

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশ নিষিদ্ধ একটি স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপ

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৬, ২০২৪, ১১:২২ পিএম

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশ নিষিদ্ধ একটি স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপ

ফাইল ছবি

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা স্বেচ্ছাচারিতামূলক গোপনীয়তার একটি জঘন্য উদাহরণ। এই সংস্থাটি এই ধরনের পদক্ষেপের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং জনস্বার্থে ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের তথ্য প্রকাশের উপর এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে টিআইবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, সাংবাদিকরা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের তথ্য সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। আমরা এই সমস্যা সমাধানে গভর্নরের কাছে সাহায্য চেয়েছিলাম কিন্তু কোনো ইতিবাচক ফল হয়নি।

টিআইবি মহাপরিচালক ইফতিখার জামান এক বিবৃতিতে বলেছেন যে এই ধরনের সিদ্ধান্ত জনগণের তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য একটি অনৈতিক এবং স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপ, তিনি বলেছেন, ‍‍`আমরা আর্থিক কেলেঙ্কারি এবং জালিয়াতির মতো বিভিন্ন সংকটে ভুগছি এবং সাধারণ একটি সুশাসনের অভাব। এমন সময়ে তথ্যের অবাধ প্রবাহ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা কী বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছেন? কিন্তু অতল গহ্বরে পৌঁছে যাওয়া ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের অভাব ঢাকতে এই প্রয়াস কি সংকটের জন্য দায়ীদের স্বার্থ রক্ষার প্রয়াস? দেউলিয়া হওয়া এবং জালিয়াতির মতো ক্ষেত্রগুলি সম্পর্কে কী?‍‍`

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‍‍`সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আর্থিক খাতে হাজার হাজার কোটি টাকার বেশির ভাগ তথ্যই এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবেশাধিকারের সূত্র থেকে। খেলাপি, জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের মতো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের সুরক্ষা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে? বাংলাদেশ ব্যাংকের রাজনীতি ও ব্যবস্থাপনা একটি অপরাধী চক্রের হাতে জিম্মি হওয়ার বিষয়টি আড়াল করতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।‍‍`

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে ,যে পাসপোর্ট ব্যবস্থা, যে প্রবর্তন ও প্রশিক্ষণের কথা গভর্নর বলছেন, সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব, বিশেষ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে একটি অনতিক্রম্য সীমাবদ্ধতার প্রতিনিধিত্ব করে। এ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বস্তরের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠক এড়াতে চেষ্টা করবেন। কারণ প্রশ্নবিদ্ধ সাংবাদিক বৈঠক শেষে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে প্রশাসনিক দায়-দায়িত্বের নামে কিছু কর্মকর্তা নিগৃহীত হবেন। এর মানে হল তথ্যের তথ্যপ্রাপ্তির সুযোগ কার্যত অবরুদ্ধ। ব্যাংকিং খাতে কী ঘটছে, কেন জনগণের টাকা নষ্ট হয়ে কারা লাভবান হচ্ছে তা জানার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জনগণ।

টিআইবি পরামর্শ দেয় যে গোপনীয়তার আক্রমণ আরও বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাছাড়া এ ধরনের সিদ্ধান্ত শুধু স্বেচ্ছাচারিতার বহিঃপ্রকাশই নয়, ঔপনিবেশিক মানসিকতারও বহিঃপ্রকাশ। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে সাংবাদিকদের নির্বিঘ্নে প্রবেশ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানিয়েছে টিআইবি।

Link copied!

সর্বশেষ :