বাংলাদেশ মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

যশোর মহাসড়কের বিটুমিন গলার ঘটনা তদন্ত করছে দুদক

জেলা প্রতিনিধি, যশোর

প্রকাশিত: মে ২, ২০২৪, ০৮:৪৪ পিএম

যশোর মহাসড়কের বিটুমিন গলার ঘটনা তদন্ত করছে দুদক

যশোর-নড়াইল মহাসড়কের বিটুমিন (পিচ) গলে যাওয়ার তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন দুদকের কর্মকর্তারা।

চলমান তাপপ্রবাহে যশোর-নড়াইল মহাসড়কের বিটুমিন (পিচ) গলে যাওয়ার তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন দুদকের কর্মকর্তারা। এ সময় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

যশোর, চুয়াডাঙ্গাসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। চলতি মৌসুমে যশোরে সর্বোচ্চ ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে প্রচণ্ড গরমে মহাসড়কের বিটুমিন গলতে শুরু করে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিটুমিনের গলার ছবি ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর মহাসড়কে ব্যবহৃত বিটুমিনের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। দুদক বিষয়টি তদন্ত শুরু করে। আজ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নির্দেশে দুদকের কর্মকর্তারা যশোর-নড়াইল মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে সড়কের তাপমাত্রা পরীক্ষা করেন।

এ সময় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের যশোরের উপ-পরিচালক আল আমিন, সহকারী পরিচালক চিরঞ্জন নিয়োগী, সহকারী পরিদর্শক সফিউল্লাহ ও সড়ক বিভাগের দুই সহকারী প্রকৌশলী উপস্থিত ছিলেন। যত দ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন জমা দেবেন বলে জানান তারা।

দুদকের উপ-পরিচালক আল আমিন বলেন, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নির্দেশে যশোর-নড়াইল সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে নেক পিচ চেক করা হয়। তারা বিভিন্ন তথ্য রেকর্ড করে হেড অফিসে পাঠাবে। তদন্তের স্বার্থে এখনই এর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।

সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চার মাস আগে যশোর-নড়াইল আঞ্চলিক মহাসড়কে কার্পেটিং করা হয়। যার প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৫ কোটি ৫৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। যশোর শহরের মনিহার জংশন থেকে ভাঙ্গুড়া পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করেছে ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মাসুদ হাইটেক। গত বছরের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হয়।

যশোর-নড়াইল সড়কের বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিটুমিন গলে সড়কের ঝুমঝুমপুর অংশে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিটুমিন রাস্তার ট্রাফিক চলাকালীন চাকায় লেগে থাকে। কোথাও কোথাও যানবাহনের চাকার চিহ্ন সড়কে বসে আছে। সড়ক সংস্কারের সময় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ সড়ক ব্যবহারকারীদের। প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা বিটুমিন গলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর জন্য নির্মাণ শ্রমিকদের দায়ী করেছেন স্থানীয় লোকজন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মুরাদ হোসেন বলেন, "দুপুর থেকে প্রখর রোদে রাস্তার পিচ গলতে শুরু করে। দুপুরের পর রাস্তার পিচ কাদায় পরিণত হয়। এতে রিকশার চাকা আটকে যায়। এতে সড়কটি এবড়োখেবড়ো হয়ে পড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে সওজের ঠিকাদার ও কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

সওজ সূত্রে জানা গেছে, সওজ সাধারণত রাস্তায় ৬০-৭০ গ্রেডের পিচ ব্যবহার করে। এর গলনাঙ্ক ৪৮ থেকে ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ, যখন তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বেড়ে যায়, তখন পিচ গলে যায়। কিন্তু তার আগেই পিচ গলে যাচ্ছে।

সওজ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া প্রথম সংবাদকে বলেন, তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বাড়লে বিটুমিন নরম হতে শুরু করে। সেখানে যশোরে তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রির ওপরে। এর জন্য বিটুমেন গলে যাচ্ছে। সড়কে নিম্নমানের কোনো সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, "দুদক তদন্ত করছে। অনিয়ম হলে তদন্ত করে বেরিয়ে আসবে।
 

Link copied!

সর্বশেষ :