বাংলাদেশ মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১

আগ্নেয়াস্ত্রের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরির ঘোষণা গুগলের

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৫, ০১:০৬ পিএম

আগ্নেয়াস্ত্রের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরির ঘোষণা গুগলের

বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন এবং টেক জায়ান্ট গুগলের আদর্শ বা মটো হলো ‘কখনও খারাপ হবে না’।

গুগল দীর্ঘদিন ধরে আগ্নেয়াস্ত্র ও যুদ্ধক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার নীতিতে অটল ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘোষণায় সংস্থাটি এই অবস্থান থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছে।

সম্প্রতি গুগলের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি এখন থেকে সামরিক খাতে এবং বিশেষত আগ্নেয়াস্ত্রের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নয়নে মনোনিবেশ করবে। গুগল জানিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শিল্পে ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার কারণেই তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গুগলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা আশা করছি, আমাদের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্বাধীনতা, সমতা এবং অন্যান্য মৌলিক মানবাধিকারের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখবে।” তবে নতুন এই প্রযুক্তি কীভাবে অস্ত্র পরিচালনা ও যুদ্ধক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে, সে বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। একই সঙ্গে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কীভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে মানবাধিকার রক্ষায় সহায়ক হবে, তা সম্পর্কেও বিস্তারিত কিছু জানায়নি সংস্থাটি।

গুগল ২০১৮ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের নীতিমালা প্রকাশ করে, যেখানে বলা হয়েছিল, তারা এমন কোনো AI প্রযুক্তি তৈরি করবে না যা সরাসরি অস্ত্রের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে। একই সঙ্গে, যুদ্ধক্ষেত্রে AI ব্যবহারের ঝুঁকি সম্পর্কে সংস্থাটি আগেও সতর্ক করেছিল।

কিন্তু নতুন সিদ্ধান্তে বোঝা যাচ্ছে, গুগল এখন আগ্নেয়াস্ত্র ও সামরিক প্রযুক্তিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বাড়াতে আগ্রহী। বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার জন্য গুগল সামরিক খাতে AI ব্যবহারের দিকটি বিবেচনা করছে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মতে, সামরিক খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। তবে যেসব সংস্থা এই খাতে AI তৈরি করছে, তাদের প্রযুক্তি এখনো সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্য নয় এবং অনেক ক্ষেত্রে তা বেসামরিক মানুষের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, গুগলের মতো শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এই খাতে প্রবেশ করলে সামরিক AI প্রযুক্তির গুণগত মান ও কার্যকারিতা নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। তবে এটি মানবাধিকারের জন্য হুমকি তৈরি করবে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক থেকেই যাচ্ছে।

গুগলের সামরিক খাতে AI ব্যবহারের এই ঘোষণা প্রযুক্তি ও নীতিনৈতিকতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। একদিকে, এটি যুদ্ধক্ষেত্রে আরও উন্নত প্রযুক্তির সম্ভাবনা তৈরি করবে, অন্যদিকে এটি মানবাধিকারের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জও তৈরি করতে পারে। এখন দেখার বিষয়, গুগল কীভাবে এই নতুন কৌশল বাস্তবায়ন করে এবং এর প্রতিক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক মহল কী পদক্ষেপ নেয়।

Link copied!

সর্বশেষ :