২০২৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ক্যারিয়ারের শেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। তার এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের আরেকটি গৌরবময় অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে। আগামী মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরে ঘরের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট শেষ করে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দেন সাকিব আল হাসান।
শুক্রবার কানপুরে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের একদিন আগে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার এই ঘোষণা দেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আগামী বছরের শুরুর দিকে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নিয়ে ওয়ানডেকেও বিদায় জানাবেন তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে অংশ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সাকিব বলেন, সে এভেইলেবল থাকলেও দেশের পরিস্থিতি অন্য রকম, এখন তার উপরে কোনো কিছুই নির্ভর করে না৷ তিনি আরো বলেন, এই সিরিজ এবং হোম সিরিজই হবে তার শেষ সিরিজ, বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে।
এ বিষয়ে তিনি বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি যদি দেশে গিয়ে খেলার সুযোগ পান তাহলে মিরপুর টেস্টই হবে তার শেষ টেস্ট। তার খেলার বিষয়ে ক্রিকেট বোর্ড সুন্দর একটা আয়োজন এর চেষ্টা করছে৷
গত কয়েক মাসে আলচনা- সমালোচনা, আইনি বিরোধ, ইমেজে বাজে ইমপ্যাক্ট অনেক কিছু হয়ে গেছে সাকিবের সঙ্গে। আরওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সাথে সাথে তিনি সংসদ সদস্যের পদও হারান। মাঠে কিংবা বাইরে সব মিলিয়ে কোথাও ভালো যাচ্ছে না সাকিবের সময়। যদিও এই কঠিন সময়ে সতীর্থদের পূর্ণ সমর্থন ছিল তার। তবে সাকিব বলেছেন, কষ্ট বা অভিমান থেকে পদত্যাগ করছেন না। তার মনে হচ্ছে নতুনদের জন্য জায়গা ছেড়ে দেয়ার সময় এসেছে।
এছাড়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণাও দিয়েছেন সাকিব। তবে দলের প্রয়োজনে তিনি ফিরতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন। টি-টোয়েন্টি নিয়েও তিনি বোর্ডের সকলের সাথে, নির্বাচক, সভাপতির সাথে কথা বলে সরে গিয়েছেন। পরবর্তী সিরিজগুলোর জন্য নতুন খেলোয়াড়দের সুযোগ দেয়ার কথা বলেন।
তবে তিনি ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে খেলা চালিয়ে যাবেন। যদি ছয় মাস বা এক বছর পরে, বিসিবি মনে করে যে তার টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে অবদান রাখার সুযোগ থাকে এবং তিনি সক্ষম ও প্রস্তুত থাকলে ফিরে আসার চিন্তা করবেন৷ তবে এই মুহুর্তে নিজেকে টি-টোয়েন্টি খেলতে দেখতে চান না। তিনি চান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এটাই শেষ টেস্ট সিরিজ হোক। টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি দুই ফরমেটে তিনি তার শেষ দেখতে পাচ্ছেন।
পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়ে তিনি ওয়ানডেকে বিদায় জানাবেন কিনা এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি আশা করছেন এটাই শেষ, হয়তো আর ৯টি ওয়ানডে বাকি।
তার ক্যারিয়ার গ্রাফ মূল্যায়ন করে তিনি বলেন, তিনি মনে করেন তিনি অনেক ভালো করেছেন। কোনো কিছুর জন্য তিনি জীবনে একবারও আফসোস করেন নি। যতদিন উপভোগ করেছেন ততদিন ক্রিকেট খেলেছেন। তিনি মনে করেন এটাই বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য এবং তার নিজের জন্য সঠিক সময়। তার অবসরের সিদ্ধান্তগুলো কোচ, অধিনায়ক, নির্বাচক, বোর্ড- সবার সঙ্গে আলোচনা করেই নিয়েছেন।
দেশের নিরাপত্তা হুমকির বিষয়ে সাকিব বলেন, তিনি সম্পুর্ন নিরাপত্তার সহীত দেশে খেলতে যেতে চান। দেশে আসা এবং দেশ থেকে বের হওয়ায় কোনো বাধা না আসলে তিনি দেশে এসে খুব ভালো খেলার চেষ্টা করবেন, অন্তত লাস্ট টেস্ট খেলে এই ফরম্যাট থেকে বের হতে পারবেন।
আপনার মতামত লিখুন :