বাংলাদেশ বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

আরচ্যারির তারুণ্যের উৎসব, প্রতিযোগিতা বিকেএসপির শ্রেষ্ঠত্ব

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৫, ০৯:৩৪ পিএম

আরচ্যারির তারুণ্যের উৎসব, প্রতিযোগিতা  বিকেএসপির শ্রেষ্ঠত্ব

উৎসব, প্রতিযোগিতা ও আনন্দের আবহে ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে শেষ হলো বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশন আয়োজিত ‘তারুণ্যের উৎসব’-এর চূড়ান্ত পর্ব। সারাদিনব্যাপী শ্বাসরুদ্ধকর প্রতিযোগিতার পর শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট উঠেছে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)-এর হাতে।

দৃষ্টিনন্দন পারফরম্যান্সের মাধ্যমে বিকেএসপি আরচ্যাররা তিনটি স্বর্ণ, তিনটি রৌপ্য এবং চারটি ব্রোঞ্জসহ মোট ১০টি পদক জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। নড়াইল জেলা দুটি স্বর্ণ ও একটি রৌপ্যসহ তিনটি পদক অর্জন করে দ্বিতীয় স্থান দখল করে, আর ফরিদপুর জেলা সম্মিলিত পারফরম্যান্সে তৃতীয় হয়।

এবারের প্রতিযোগিতায় আটটি দলের ৫৯ জন আরচ্যার অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতাটি আটটি ইভেন্টে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ছেলে ও মেয়েরা সমানভাবে নিজেদের দক্ষতা প্রদর্শন করেন। তবে কেবল প্রতিযোগিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না এই আয়োজন। দিনব্যাপী উৎসবে ছিল বর্ণাঢ্য র‍্যালি, পিঠা উৎসব, স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি এবং মনোমুগ্ধকর দেশীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

তারুণ্যের উদ্দীপনাকে ছড়িয়ে দিতে বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশন চূড়ান্ত পর্বের আগে দেশব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছিল। নীলফামারী, ফরিদপুর, টঙ্গী, নাটোরের খুবজীপুর, চুয়াডাঙ্গা, নড়াইল, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে উৎসবের বিভিন্ন ধাপ সম্পন্ন হয়। এর আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছিল ১৫ জানুয়ারি, নীলফামারী থেকে।

চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম, এনডিসি এবং বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল।

সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোঃ মোখলেস উর রহমান। তিনি আরচ্যারদের সাফল্যের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে এই খেলার বিকাশে আরও সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশনের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের আরচ্যাররা যে কৃতিত্ব অর্জন করেছে, তা দেশের গর্ব। তিনি আরও উল্লেখ করেন, অন্যান্য খেলাধুলার তুলনায় আরচ্যারির পদক জয়ের হার বেশি, যা এই খেলাটিকে আরও গুরুত্ব দেয়।

বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল জানান, আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের আরচ্যারদের ধারাবাহিক সাফল্যের ফলে এই ফেডারেশন জাতীয় সম্মান পাওয়ার যোগ্যতা রাখে। তিনি ২০১৯ সালের সাউথ এশিয়ান গেমসের উদাহরণ টেনে বলেন, সেবার ১০টি স্বর্ণপদকের সবকটি জিতেছিল বাংলাদেশের আরচ্যাররা। অলিম্পিক গেমসে সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে আরচ্যারির এই অগ্রযাত্রা অন্য যে কোনো ফেডারেশনের তুলনায় ব্যতিক্রমী বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এই প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র একটি টুর্নামেন্ট নয়, বরং দেশের তরুণদের প্রতিভা বিকাশের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম। সরকারের সহযোগিতা এবং ফেডারেশনের পরিকল্পিত উদ্যোগে আগামী দিনে বাংলাদেশের আরচ্যাররা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও সাফল্য অর্জন করবে—এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

Link copied!

সর্বশেষ :