‘আমার স্ত্রী মাকছুদাকে মেরে ফেলেছি। আমি বাসায় আছি। আমাকে থানায় নিয়ে যান।’ বংশালে নিজের স্ত্রী মাকসুদা খাতুনকে (২৬) হ*ত্যা করার পর থানায় ফোন করে একথা বলেন স্বামী ইব্রাহিম খান (৩৭)। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নাজিরা বাজারের সিক্কাটুলি লেনের ২৪নং বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে এ হ*ত্যার ঘটনা ঘটে। এরপর বাসায় গিয়ে ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করে বংশাল থানা পুলিশ। এ ঘটনায় বংশাল থানায় ভুক্তভোগী মাকছুদার ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে একটি হ*ত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে গ্রেপ্তারের পর থানায় আসামি ইব্রাহিম খানের সঙ্গে কথা হয় প্রথম সংবাদের এক প্রতিবেদকের। ইব্রাহিমকে এসময় বিমর্ষভাবে কাঁদতে দেখা যায়। তিনি বলেন, আমার স্ত্রী মাকসুদাকে আমি খুব ভালোবাসি। আমাদের দুজনেরই আগে আরেক জায়গায় বিয়ে হয়েছিল। আমরা সবকিছু ভুলে দুজনের একসঙ্গে বাঁচার স্বপ্ন দেখেছিলাম। আমাদের এক বছরের একটা মেয়েও (নাম বুশরা) আছে। কিন্তু আরেকজনের সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্ক কে মেনে নিবে? এটা নিয়ে প্রায় আমাদের ঝামেলা হতো। আমি তার পরিবারকেও অনেকবার জানিয়েছি।
ইব্রাহিম আরও বলেন, আমার ওয়াইফ বংশালে স্ত্রী মাকসুদা খাতুনকে হাতুড়ি দিয়ে হত্যা করে থানায় ফোন করে আত্মসমর্পণ করেন স্বামী ইব্রাহিম খান। হত্যার পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ইব্রাহিম জানান, স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক অশান্তির কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। তিনি দাবি করেন, স্ত্রীকে মারার উদ্দেশ্য ছিল না, তবে অযাচিত ঝগড়ার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। করতো। সে আমাকে না জানিয়ে একদিন আগে একজনের সঙ্গে দেখা(পরকিয়া) করেছে। এটা নিয়ে আমার সঙ্গে তার ঝামেলা হয়। আজ বিকেলে আমি তাকে ভয় দেখানোর জন্য বাড়িতে থাকা একটা হাতুড়ি নিয়ে আসি। এরপর টেবিলের ড্রয়ারের ভেতর রাখি। আমার কিন্তু তাকে মারার ইচ্ছা ছিল না। এটা বলে কাঁদতে থাকেন ইব্রাহিম।
এরপর কেন মারলেন প্রশ্ন করা হলে তিনি আরও বলেন, সে (মাকসুদা) আমার সঙ্গে চিল্লাচিল্লি শুরু করে। এসময় কীভাবে দিয়ে কী হলো আমি বলতে পারব না। এটা বলে আবার কাঁদতে থাকেন তিনি। কিছু সময় পর তিনি কেঁদে বলেন, আমার বাবুটাও কাঁদতেছিল। গতকাল বুশরার প্রথম জন্মদিন পালন করলাম। ওকে এখন কে দেখবে? হ*ত্যা করে না পালিয়ে থানায় জানালেন কেন- ইব্রাহিমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি মাকসুদা খুবই ভালোবাসি। সে চলে গেছে। আমি বেঁচে কী করব?
থানায় কীভাবে যোগাযোগ করলেন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি ৯৯৯ এ ফোন দিই। কিন্তু যোগাযোগ করতে পারিনি। পরে আমার পরিচিত একজন পুলিশ কর্মকর্তা ছিল। তাকে ফোন দিই। সে আমাকে বংশাল থানার পুলিশের নম্বর দেয়। এরপর আমি থানায় ফোন দিয়ে বলি, আমার স্ত্রী মাকসুদাকে মেরে ফেলেছি, আমি বাসায় আছি। আমাকে থানায় নিয়ে যান।
আরো পড়ুন
আপনার মতামত লিখুন :