দোয়া একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। যে কোনো সময় যে কোনো দোয়া পড়া যায়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রসুল সা. আমাদের দোয়া শিখিয়েছেন। এমনকি ছোট থেকে ছোট বিষয়েরও দোয়া শিখিয়েছেন।
آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مِن رَّبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ ۚ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّن رُّسُلِهِ ۚ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا ۖ غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ
لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا ۚ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ ۗ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ ۖ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا ۚ أَنتَ مَوْلَانَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
উচ্চারণ: ১. আ-মানাররাছূলু বিমাউনঝিলা ইলাইহি মির রাব্বিহী ওয়াল মু’মিনূনা কুল্লুন আ-মানা বিল্লাহি ওয়া মালাইকাতিহী ওয়া কুতুবিহী ওয়া রুছুলিহী লা-নুফাররিকু বাইনা আহাদিম মির রুছুলিহী ওয়া কা-লূ ছামি‘না ওয়াআতা‘না গুফরা-নাকা রাব্বানা-ওয়া ইলাইকাল মাসীর। ২. লা-ইউকালিলফুল্লা-হু নাফছান ইল্লা-উছ‘আহা-লাহা-মা কাছাবাত ওয়া ‘আলাইহা-মাকতাছাবাত রাব্বানা-লা-তুআ-খিযনা ইন নাছীনা-আও আখতা’না-রাব্বানা ওয়ালা-তাহমিল ‘আলাইনা-ইসরান কামা-হামালতাহূ আলাল্লাযীনা মিন কাবলিনা-রাব্বানা-ওয়ালা তুহাম্মিলনা-মা-লা-তা-কাতা লানা-বিহী ওয়া‘ফু‘আন্না-ওয়াগফিরলানা-ওয়ারহামনা-আনতা মাওলা-না-ফানসুরনা-‘আলাল কাওমিল কা-ফিরীন।
অর্থ: ১. রসুল বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তার ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি এবং তাঁর পয়গম্বরগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর পয়গম্বরদের মধ্যে কোন তারতম্য করিনা। তারা বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা তোমার ক্ষমা চাই, হে আমাদের পালনকর্তা। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।
২. আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভূ! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে কর। (সুরা বাকারা ২৮৫, ২৮৬)
হযরত নোমান ইবনে বশীর (রা.) হইতে বর্নিত আছে যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, আসমান ও জমিন সৃষ্টির দুই হাজার বৎসর পূর্বে আল্লাহ্ তায়ালা একটি কিতাব লিখিয়াছেন। উক্ত কিতাব হইতে দুইটি আয়াত নাজিল করিয়াছেন যাহার উপর আল্লাহ্ তায়ালা সূরা বাকারাহ শেষ করিয়াছেন। এই আয়াতদ্বয় (আয়াত দুটি) একাধারে তিন রাত্র যে ঘরে পড়া হয়, শয়তান উহার নিকটেও আসেনা। (তিরমিজি)
হযরত আবু মাসউদ আনসারী (রা.) হইতে বর্নিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, যে ব্যক্তি কোন রাত্রে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়িয়া লইবে তবে এই দুই আয়াত তার জন্য যথেষ্ট হইয়া যাইবে। (তিরমিজি)
দুই আয়াতের যথেষ্ট হওয়ার দুই অর্থ-- এক এই যে, উহার পাঠকারী সেই রাত্রে সকল খারাবী হইতে নিরাপদ থাকিবে। দ্বিতীয় এই যে, এই দুই আয়াত তাহাজ্জুতের স্থলে হইয়া যাইবে। (ইমাম নববি)হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হইতে বর্নিত আছে যে, একবার জিবরাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বসিয়াছিলেন, এমন সময় আসমান হইতে কড় কড় আওয়াজ শুনা গেল। তিনি মাথা উঠাইলেন এবং বলিলেন, আসমানের একটি দরওয়াজা খুলিল যাহা আজকের পূর্বে কখনো খুলে নাই। এই দরজা দিয়ে একজন ফিরিশতা অবতরন করিয়াছেন।
এই ফিরিশতা আজকের পূর্বে কখনো জমিনে আসেন নাই। সেই ফিরিশতা খেদমতে উপস্থিত হইয়া সালাম করিলেন এবং আরজ করিলেন, সুসংবাদ হউক, আপনাকে দুইটি নূর দেওয়া হইয়াছে যাহা আপনার পূর্বে কোন নবীকে দেওয়া হয় নাই। একটি সূরা ফাতিহা, দ্বিতীয়টি সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত। আপনি উহা হইতে যেকোন বাক্য পড়িবেন তাহা আপনাকে দেওয়া হইবে। (মুসলিম)
অর্থাৎ, যদি প্রশংসামূলক বাক্য হয়, তবে প্রশংসা করার সওয়াব পাইবেন, আর যদি দোয়ার বাক্য হয় তবে দুয়া কবুল করা হইবে।
আপনার মতামত লিখুন :