নিকারাগুয়া সরকার ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের লাগাতার আক্রমণের প্রতিবাদে ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে। মধ্য আমেরিকার এই দেশটি ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে ‘ফ্যাসিস্ট’ ও ‘গণহত্যামূলক’ বলে আখ্যায়িত করেছে। নিকারাগুয়ার এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান প্রতিক্রিয়ার আরেকটি দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) নিকারাগুয়ার সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, তাদের সিদ্ধান্তের প্রধান কারণ হলো ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ‘নির্বিচার’ হামলা। দেশটির কংগ্রেসও এই বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাস করেছে। যার ফলে সরকার কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্যোগ নেয়। নিকারাগুয়ার সরকার বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করে, এই সংঘাত এখন লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং ইরানের ওপরও হুমকি তৈরি করেছে। এসব দেশের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার শঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে প্রাণঘাতী হামলা চালায়। সেই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল অব্যাহতভাবে গাজায় ভয়াবহ আক্রমণ চালায়। যার ফলে গত এক বছরে প্রায় ৪২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং গাজা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে ইরান সমর্থিত লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে ইসরায়েলের সীমান্ত সংঘর্ষ আরও তীব্র হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল ব্যাপকভাবে হিজবুল্লাহর অবস্থানগুলোতে হামলা চালিয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১ অক্টোবর ইরান ইসরায়েলের ওপর প্রায় ২০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইসরায়েলও পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ইরানের ওপর ‘প্রাণঘাতী’ হামলার হুমকি দিয়েছে। ইসরায়েল-ইরান সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করলে একটি বড় ধরনের আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে এই পরিস্থিতি নিয়ে চরম উদ্বেগ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, ইরান নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট দানিয়েল ওর্তেগার প্রশাসনের মিত্র দেশ। নিকারাগুয়ার আগে আরেক লাতিন আমেরিকান দেশ কলম্বিয়াও ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। ইসরায়েলের আক্রমণের পর থেকে বিভিন্ন দেশ তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার এই ধারাকে অব্যাহত রাখছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স
আপনার মতামত লিখুন :