রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ বা অপসারণ নিয়ে উত্তপ্ত চলমান পরিস্থিতি। শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের দাবি জানালেও রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধ এবং আইনি জটিলতায় অন্তর্বর্তী সরকার বেশ চাপের মুখে পড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে উপদেষ্টাদের বিবৃতি এবং শিক্ষার্থীদের ব্যাপক বিক্ষোভ রাষ্ট্রপতির বিদায়ের পথ প্রায় পাকা করে ফেলেছিল। কিন্তু বিএনপি এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেন। দলটির নেতারা বলছেন এমন পদক্ষেপে নতুন সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে যা দেশের জন্য ক্ষতিকর।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও বিএনপির দ্বিমত
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল, রাষ্ট্রপতির অপসারণ অবিলম্বে করতে হবে। অন্যদিকে শহীদ মিনারে এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের পাঁচ দফা দাবি পুনর্ব্যক্ত করে। তবে বিএনপির অবস্থান পুরোপুরি বিপরীত। দলটি চায় না রাষ্ট্রপতির অপসারণ নতুন কোনো সংকট সৃষ্টি করুক। বিএনপি নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরবর্তী পরিস্থিতিতে আরও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চায়।
সেনাপ্রধানের ভূমিকা ও প্রধান বিচারপতির সম্ভাবনা
অন্তর্বর্তী সময়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের এত কিছুর মাঝেও বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তবে তার দেশে ফেরার পর পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। সম্ভাব্য নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নামও আলোচনায় উঠে এসেছে। তবে তিনি বিচার বিভাগের সংস্কার কাজ অসমাপ্ত রেখে পদত্যাগে আগ্রহী নন।
রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে বিতর্ক ও আইনি বিশ্লেষণ
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানান যে তিনি শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি। এই মন্তব্যকে ঘিরে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এই মন্তব্যকে মিথ্যাচার এবং রাষ্ট্রপতির শপথ ভঙ্গ হিসেবে উল্লেখ করেন। যদিও রাষ্ট্রপতি পরে দাবি করেন তার মন্তব্য সঠিকভাবে প্রকাশিত হয়নি এবং এটি ছিল অনানুষ্ঠানিক আলোচনা।
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দেশের ভবিষ্যৎ
বঙ্গভবনের বাইরে চলমান বিক্ষোভের মাঝে নতুন রাষ্ট্রপতির বিষয়ে জল্পনা শুরু হয়। তবে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদের মতে রাষ্ট্রপতির থাকা না থাকা একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এবং এই বিষয়ে আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন হঠাৎ করে রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হলে তা সাংবিধানিক সংকট তৈরি করবে যা দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটাবে। বিএনপির এ অবস্থান এবং উপদেষ্টা নাহিদের বিবৃতি কিছু সময়ের জন্য হলেও আন্দোলনকে স্থির করে দিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :