জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মাহাত্ম্য ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “এই ভাষণ জনগণকে শুধু উদ্বুদ্ধ করেনি, গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেনি, বরং জাতির জন্য স্বাধীনতাও এনে দিয়েছে।”
তিনি বলেন, “একজন নেতার (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) একটি ভাষণ শুধু জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেনি, গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেনি। বরং যুদ্ধে বিজয়ও এনেছে। এটাই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।”
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “পাকিস্তানিরা এই ভাষণের অর্থ ও ব্যাখ্যা খুঁজতে তাদের সময় ব্যয় করেছে। তারা (ভাষণের) উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছিল। তিনি (বঙ্গবন্ধু) কী বলেছিলেন এবং কী হয়েছিল। বাংলাদেশের জনগণ অস্ত্র হাতে নেমে যুদ্ধ করেছে… এটাই ছিল তাদের (পাকিস্তানিদের) বক্তব্য।”
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের উত্তর পেতে তারা (পাকিস্তানিরা) অনেক সাংবাদিক ও অন্যান্যকে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে গিয়েছিল বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণটি এখন বিশ্বের শীর্ষ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে যা মানুষকে মুক্তির দিকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। যদিও স্বাধীনতাবিরোধীরা বারবার ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে।”
“ইতিহাসকে মুছে ফেলা যায় না, মিথ্যা দিয়ে সত্যকে আড়াল করা যায় না। এখন তা প্রমাণিত হয়েছে।“ বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, “এই ভাষণটি বিশ্বের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্থান পেয়েছে যেখানে নেতারা তাদের বক্তৃতার মাধ্যমে মানুষকে স্বাধীনতার জন্য উৎসাহিত করেছেন।”
তিনি বলেন, “তারা (স্বাধীনতাবিরোধীরা) জাতির পিতার নাম মুছে দিয়েছিল, তার ছবি দেখানো হয়নি, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করেছে, জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ করেছে।”
জাতির পিতা জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে বলেন, “স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর প্রচেষ্টাকে পছন্দ করেনি কারণ তিনি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে তিন বছর সাত মাসে দেশকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেছিলেন।”
“এবং যখন দেশ অর্থনৈতিক মুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, স্বাধীনতাবিরোধীরা তা পছন্দ করেনি,” তিনি বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় হলো পাকিস্তানিরা জাতির পিতাকে হত্যা করতে পারেনি, কিন্তু দেশের মানুষ খুনি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এটি কেবল ক্ষমতার জন্য হত্যা নয়, তারা কেবল রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করেনি।”
তিনি আরো বলেন, “এই বিশাল রক্তপাতের পর বাংলাদেশ এক কদমও এগোতে পারেনি। বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে আটকে ছিল, সেখানে কোনো আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি ছিল না যখন মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি।”
সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমেদ।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ পরিবেশন করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :