রাষ্ট্রপতির পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ

ঢাকায় বঙ্গভবনের সামনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগসহ পাঁচ দিফা দাবিতে বিক্ষোভ করছে বিভিন্ন শিক্ষার্থী সংগঠন। ‘স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটি’ ব্যানারে একদল শিক্ষার্থী মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে বঙ্গভবনের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয় এবং স্লোগান দিতে শুরু করে।

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল শুরু করে শিক্ষার্থীরা বঙ্গভবনের দিকে অগ্রসর হয়। মিছিলটি হাইকোর্ট মাজার মোড় পার হয়ে বঙ্গভবনের সামনে পৌঁছায়। সেখানে তারা বঙ্গভবনের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। বাধা পেরিয়ে তারা প্রধান ফটকের সামনে বসে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত তাদের অবস্থান অব্যাহত ছিল।

ব্যানার হাতে বিক্ষোভ

বিক্ষোভের কারণে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) বঙ্গভবন ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে। ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মো. ফারুক হোসেন জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বিপুল সংখ্যক পুলিশ, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্য, সেনাবাহিনীর এপিসি (আর্মড পার্সোনেল ক্যারিয়ার), জলকামান এবং র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনীও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শাহরিয়ার আলী জানান, কয়েকটি গ্রুপ বিক্ষোভ করছে কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

একই দাবিতে ‘রক্তিম জুলাই-২০২৪’ ব্যানারে আরেকটি গ্রুপও বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ করছে। পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ, সংবিধান সংশোধন, বিগত তিনটি সংসদ নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধসহ মোট পাঁচ দফা দাবিতে জাতীয় শহীদ মিনারে কর্মসূচি পালন করছে। সন্ধ্যায় এই শিক্ষার্থীরাও বঙ্গভবনের দিকে অগ্রসর হবে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন

আত্মগোপনে ওবায়দুল কাদের, খোঁজ দিলে পুরস্কার দেবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবি কেন উঠলো!

বিক্ষোভের মূল কারণ রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের দেয়া এক সাম্প্রতিক বক্তব্য। গত ৫ই আগস্ট ২০২৪ তারিখে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেন। দেশত্যাগের পর রাষ্ট্রপতি জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে জানান, প্রধানমন্ত্রী তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং তিনি তা গ্রহণ করেছেন।

কিন্তু কয়েকদিন পর এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের কোনো দালিলিক প্রমাণ তার কাছে নেই। তিনি বলেন, ‍‍`বহু চেষ্টা করেও পদত্যাগপত্র সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়েছি। হয়তো প্রধানমন্ত্রী সময় পাননি।‍‍` রাষ্ট্রপতির এই মন্তব্যের পর থেকেই বিভিন্ন সংগঠন তার পদত্যাগের দাবি তুলে। আজকের এই আন্দোলনটি মূলত রাষ্ট্রপতির এই বেফাস বক্তব্যের প্রতিবাদে গড়ে উঠেছে।