সাহারা মরুভূমি আফ্রিকা মহাদেশের উত্তরে অবস্থিত এবং এটি বিশ্বের বৃহত্তম উষ্ণ মরুভূমি। প্রায় ৯.২ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই মরুভূমি উত্তর আফ্রিকার ১১টি দেশজুড়ে রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দেশগুলো হলো—আলজেরিয়া, মিশর, লিবিয়া, মালি, মরক্কো, নাইজার, সুদান, এবং চাদ।
ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য ও জলবায়ু
সাহারা মরুভূমি মূলত শুষ্ক এবং বালিয়াড়ি অঞ্চলের জন্য পরিচিত। এতে বিশাল বালির টিলা, পাথুরে সমভূমি, এবং শুষ্ক নদীখাত রয়েছে।
- তাপমাত্রা: গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা ৫০°C ছাড়িয়ে যেতে পারে। শীতকালে রাতের বেলায় তাপমাত্রা হঠাৎ করে শূন্য ডিগ্রির নিচে নেমে আসে।
- বর্ষণ: মরুভূমির বেশিরভাগ অংশেই বৃষ্টি খুবই কম হয়, বছরে গড়ে ২৫০ মিমি বা তারও কম বৃষ্টিপাত হয়।
প্রাণী ও উদ্ভিদজগত
মরুভূমির প্রতিকূল পরিবেশে কিছু নির্দিষ্ট উদ্ভিদ এবং প্রাণী বেঁচে থাকতে সক্ষম হয়েছে। এর মধ্যে ক্যাকটাস, খেজুর গাছ, ফেনেক শেয়াল, মরুভূমির ছাগল, এবং উট উল্লেখযোগ্য। প্রাণীগুলো দীর্ঘ সময় পানির অভাব সহ্য করতে পারে এবং দ্রুত পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়।
ইতিহাস ও মানব বসতি
আদিকালে সাহারা অঞ্চল সবুজ ও আর্দ্র ছিল, যা ধীরে ধীরে জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে মরুভূমিতে রূপান্তরিত হয়। এই অঞ্চলে তুয়ারেগ ও বেদুইন যাযাবর জাতিরা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে। তারা উটের কাফেলা নিয়ে মরুভূমির বিভিন্ন অংশে যাতায়াত করে।
পর্যটন ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব
সাহারা মরুভূমি পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্থান। মরক্কোর মেরজুগা এবং তিউনিশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে উট সাফারি জনপ্রিয়।
- খনিজ সম্পদ: সাহারায় প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল, এবং ইউরেনিয়ামসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খনিজের মজুদ রয়েছে।
- সৌর শক্তি: সাহারার বিস্তীর্ণ এলাকা সৌর শক্তি উৎপাদনের জন্য এক বিশাল সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত।
সাহারা মরুভূমি নিয়ে কৌতূহল
- পৃথিবীর বৃহত্তম বালির টিলা: সাহারার কিছু অংশে বালির টিলা ১৮০ মিটার (প্রায় ৬০০ ফুট) পর্যন্ত উঁচু হতে পারে।
- রহস্যময়তা: কিছু গবেষণা অনুসারে সাহারা এলাকায় আদিম যুগে হ্রদ এবং জলাশয় ছিল। এমনকি সম্প্রতি, এখানে হ্রদের অস্তিত্বের প্রমাণও পাওয়া গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :