বাংলাদেশ রবিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১

সরকারী প্রচেষ্টার পরেও চীনের তরুণদের বিয়েতে অনাগ্রহ

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৫, ০২:৪০ পিএম

সরকারী প্রচেষ্টার পরেও চীনের তরুণদের বিয়েতে অনাগ্রহ

জন্মহার বাড়াতে বিয়ের খরচ কমানোসহ চীনজুড়ে আরও নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে

চীনে বিয়ের হার হ্রাস

চীনে বিয়ের হার প্রতি বছর উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাচ্ছে। ২০২৪ সালে মাত্র ৬১ লাখ যুগল বিয়ে নিবন্ধন করেছেন, যা ২০২৩ সালের ৭৬.৮ লাখ থেকে ২০% কম। এই প্রবণতা প্রমাণ করে যে চীনের তরুণ প্রজন্ম ক্রমশ বিয়েতে আগ্রহ হারাচ্ছে।

বিয়ে উৎসাহিত করতে সরকারি উদ্যোগ

কমতে থাকা জন্মহার ও বৃদ্ধ জনসংখ্যার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে চীন সরকার তরুণদের বিয়ে ও সন্তান নিতে উৎসাহিত করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই পদক্ষেপগুলোর মধ্যে আর্থিক সুবিধা, দীর্ঘ মাতৃত্বকালীন ছুটি ও আবাসন সুবিধা অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু এসব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তরুণরা বিয়ের বিষয়ে অনাগ্রহী থেকে যাচ্ছে।

বিয়েতে আগ্রহ হ্রাসের কারণ

চীনে তরুণদের বিয়েতে আগ্রহ হারানোর পেছনে কিছু মূল কারণ রয়েছে:

  1. বর্ধিত জীবনযাত্রার ব্যয় - উচ্চ মূল্যের আবাসন, শিক্ষা ও দৈনন্দিন ব্যয় বিয়ে ও পরিবার গঠনে আর্থিক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে।
  2. কর্মসংস্থানের অনিশ্চয়তা - ধীরগতির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তরুণদের জন্য চাকরি পাওয়া কঠিন করে তুলছে, ফলে তারা দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক গড়তে দ্বিধান্বিত।
  3. সামাজিক মূল্যবোধের পরিবর্তন - ঐতিহ্যবাহী বিয়ের ধারণা পরিবর্তিত হচ্ছে, অনেক তরুণ এখন ব্যক্তিগত উন্নতি, কর্মজীবন এবং স্বাধীনতাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।
  4. অভিভাবকত্বের চ্যালেঞ্জ - চীনে সন্তান প্রতিপালন একটি বড় আর্থিক ও মানসিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা দম্পতিদের সন্তান নিতে নিরুৎসাহিত করছে।

চীনের ভবিষ্যৎ বিয়ের প্রবণতা

বিয়ের হার হ্রাস ও বৃদ্ধ জনসংখ্যার কারণে চীন একটি বড় জনসংখ্যাগত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে, যা তার কর্মসংস্থান ও অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। সরকার বিয়ের হার বাড়াতে নীতিগত পরিবর্তন আনলেও, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো এখনও তরুণদের বিয়ের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করছে।

সারসংক্ষেপ যতদিন না অর্থনৈতিক নীতি ও সামাজিক কাঠামোতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়, ততদিন চীনে বিয়ের হার কমতে থাকবে। আর্থিক নিরাপত্তা, কর্মজীবন ও পারিবারিক দায়িত্বের ভারসাম্য এবং সাংস্কৃতিক প্রত্যাশাগুলোর পরিবর্তনই হয়তো ভবিষ্যতে বিয়ের প্রবণতা পুনর্গঠনের মূল চাবিকাঠি হতে পারে।

গত নভেম্বরে চীনের মন্ত্রিসভা দেশটির স্থানীয় সরকারগুলোকে জনসংখ্যাসংকট মোকাবিলায় সম্পদের বিনিয়োগ এবং ‘সঠিক বয়সে’ বিয়ে করা ও সন্তান নেওয়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর নির্দেশ দেয়। বিয়ের খরচ কমানোসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। করোনাকালের অর্থনৈতিক স্থবিরতা কাটিয়ে ২০২৪ সালে চীনে জন্মহার কিছুটা বেড়েছে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চীনে গত বছর ২৬ লাখের বেশি যুগল বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেছেন। এটা ২০২৩ সালের তুলনায় ১ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।

 

Link copied!

সর্বশেষ :