ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা হতে পারে ক্ষণস্থায়ী আবার হতে পারে দীর্ঘস্থায়ী। দীর্ঘস্থায়ী বিষণ্ণতায় আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
তবে সবসময় যে চিকিৎসার মাধ্যমে বিষণ্ণতা থেকে মুক্তি মিলবে এমনটাও নয়। তাই তারচেয়ে এর পেছনে থাকা কারণ খুঁজে বের করা, কারণগুলো আগে থেকেই প্রতিরোধ করা বেশি কার্যকর। দৈনন্দিন জীবনে আমরা কিছু ছোটো ছোটো পরিবর্তন করেই ডিপ্রেশনকে দূরে রাখতে পারি।
১। ব্যায়াম করা: সপ্তাহে অন্তত ৩ থেকে ৫ দিন আধঘণ্টা সময় আমরা ব্যয় করতে পারি ব্যায়ামের জন্য। বিভিন্ন গবেষকের মতে, শরীরচর্চা বা ব্যায়াম– শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে যা দেহের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র শান্ত রাখে। দেহের এন্ডোরফিন নামক হরমোনের ক্ষরণ বাড়ায় যা মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। দেহের ইমিউন সিস্টেমের যে অংশগুলো ডিপ্রেশন বাড়িয়ে দেয়, সেগুলোর প্রভাব কমায়।
২। মাদকদ্রব্য থেকে দূরে থাকা: মদ, ফেনসিডিল, ইয়াবা বা অন্যান্য মাদকদ্রব্য গ্রহণে সাময়িক প্রশান্তি মেলে বলে ধারণা করা হলেও তা কিন্তু শরীরের জন্য একদমই উপকারী নয়। দীর্ঘদিন ধরে মাদকদ্রব্য গ্রহণের ফলে ডিপ্রেশন ও উদ্বিগ্নতার লক্ষণ আরও প্রকোপ হয়।
৩। সীমা নির্ধারণ করতে শেখা: কোনো বিষয় বা কাজ নিয়ে অতিরিক্ত মগ্ন হয়ে থাকা ডিপ্রেশন আর অস্থিরতা দুটোই বাড়িয়ে দিতে পারে। অতএব, ব্যক্তিজীবন এবং কর্মজীবনের মাঝখানে সীমা টানতে হবে।
৪। সিগারেটকে না বলা: সিগারেট আর ডিপ্রেশন একে অপরকে স্থায়ী করে তোলে। ডিপ্রেশন থেকে দূরে থাকতে সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস ছাড়তে হবে।
৫। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা: বেশকিছু গবেষণা বলছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার ডিপ্রেশনের কারণ হতে পারে এবং আত্মসম্মানবোধ কমিয়ে দিতে পারে। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার কমিয়ে পরিবার, বন্ধু কিংবা সহকর্মীদের বেশি সময় দেওয়া উচিত।
৬। মানসিক চাপ কমানো: দীর্ঘসময় মানসিক চাপ নিয়ে থাকা ডিপ্রেশনের একটি সাধারণ কারণ। কোনো বিষয় বা কাজের প্রতি অতিরিক্ত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে গেলে তা ডিপ্রেশনের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। তাই নিজেকে বুঝিয়ে যা করা বা পাওয়া সম্ভব নয় তা নিয়ে চিন্তা করা বাদ দেওয়াই ভালো।
৭। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভালো করে জানা: যে ওষুধ খাওয়া হচ্ছে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো আগে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। এমন কিছু ওষুধ রয়েছে যেগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ডিপ্রেশন বাড়তে পারে। তাই, যেকোনো ওষুধই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো খাওয়া উচিত এবং ওষুধটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ডিপ্রেশন হতে পারে কি না সেটা জেনে নেওয়া উচিত।
৮। নিজের যত্ন নেওয়া: নিজের যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে সহজেই ডিপ্রেশনের মাত্রা কমিয়ে আনা যায়। পরিমিত ঘুমাতে হবে আর স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস থাকতে হবে। মন খারাপের কারণ হবে এমন মানুষদের এড়িয়ে চলতে হবে। যেসব কাজে আনন্দ পাওয়া যায়, তাতে বেশি বেশি অংশ নিতে হবে।
নিজেকে ভালোবাসা বিষণ্ণতা কমানোর জন্য সবচেয়ে জরুরি।
আপনার মতামত লিখুন :