আজ ২৯ অক্টোবর, বিশ্ব স্ট্রোক দিবস ২০২৪। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য "টুগেদার উই ক্যান বি গ্রেটার দেন স্ট্রোক" অর্থাৎ ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় স্ট্রোকের চেয়েও শক্তিশালী হওয়া সম্ভব। বিশ্বব্যাপী স্ট্রোক সচেতনতার জন্য দিনটি পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি পালিত হবে। তবে স্ট্রোকের এই ক্রমবর্ধমান সমস্যা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বেশ উদ্বিগ্ন।
বাংলাদেশে স্ট্রোক পরিস্থিতি
রাজধানীর নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ১২০ থেকে ১৪০ জন রোগী হাসপাতালে থেরাপি নিতে আসেন। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে রিহ্যাবিলিটেশন সেবা না থাকায় রোগীরা রাজধানীতে চিকিৎসার জন্য ছুটতে বাধ্য হচ্ছেন।এমনকি ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড নিউরো রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগে ফিজিওথেরাপি সেবা নেওয়ার জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
স্ট্রোকের চিকিৎসায় বাংলাদেশের অক্ষমতা
দেশে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ স্ট্রোক রোগী রয়েছে বলে জানা গেছে। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষের জন্য ৮ থেকে ১০ হাজার ফিজিক্যাল মেডিসিন চিকিৎসক প্রয়োজন কিন্তু দেশে মাত্র সাড়ে ৪ হাজার ফিজিওথেরাপিস্ট, ১৫০ জন অকুপেশনাল থেরাপিস্ট এবং প্রায় ৫০ জন স্পিচ থেরাপিস্ট রয়েছেন। ফলে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে এ সেবা অত্যন্ত সীমিত। মুগদা মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এহসানুল হক খান বলেন, স্ট্রোক নির্ণয়ে সিটি স্ক্যান অত্যাবশ্যক। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে সিটি স্ক্যান মেশিন না থাকায় রোগ নির্ণয় কঠিন হয়ে পড়ে।
স্ট্রোকের লক্ষন, কারন ও প্রতিরোধ
মুখ বেঁকে যাওয়া, হাত বা পায়ে দুর্বলতা, ঝাপসা দেখা, কথা জড়িয়ে যাওয়া এবং ভারসাম্য হারানো স্ট্রোকের লক্ষণ।
মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হলে স্ট্রোক হয়, যা সাধারণত রক্তনালী বন্ধ হয়ে বা ছিঁড়ে গেলে ঘটে। এর ফলে অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের টিস্যু নষ্ট হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোকের প্রধান কারণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মোবাইল আসক্তি, ফাস্টফুড, ধূমপান, এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের ৮০ শতাংশ স্ট্রোক এশিয়ার দেশগুলোতে ঘটবে বলে পূর্বাভাস করা হয়েছে। তাই স্ট্রোক প্রতিরোধে জীবনধারা পরিবর্তন, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের কর্মসূচি
বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরো সার্জন্সের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যালি ও লাইভ সার্জারির আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে স্ট্রোক সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করেছে নিউরোসার্জারি সোসাইটি অব বাংলাদেশ।
আপনার মতামত লিখুন :