বাংলাদেশ রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২

গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডসে কানইয়ে ওয়েস্ট ও বিয়াঙ্কা সেনসরির উপস্থিতি ও পোশাক বিতর্ক

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৫, ০৮:২৩ পিএম

গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডসে কানইয়ে ওয়েস্ট ও বিয়াঙ্কা সেনসরির উপস্থিতি ও পোশাক বিতর্ক

কানইয়ে এখন আলোচিত স্ত্রী বিয়াঙ্কার পোশাকের কারণে । ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্রিপ্টোডটকম অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত হলো ৬৭তম গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডস। দীর্ঘ ছয় বছর পর আবারও এই মর্যাদাপূর্ণ আসরে হাজির হন মার্কিন র‍্যাপার কানইয়ে ওয়েস্ট। তবে তার উপস্থিতির চেয়েও বেশি আলোচিত হয়ে উঠেছে তার স্ত্রী বিয়াঙ্কা সেনসরির পোশাক ও সেই নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক। এই প্রতিবেদনটিতে আমরা পুরো ঘটনার বিশদ বিশ্লেষণ করব, যা শুধু কানইয়ের অংশগ্রহণই নয়, বরং গ্র্যামির লালগালিচার ফ্যাশন ট্রেন্ড, সাংস্কৃতিক প্রতিক্রিয়া, এবং এ ধরনের ঘটনাগুলোর সামাজিক প্রভাব সম্পর্কেও গভীর অন্তর্দৃষ্টি দেবে।

কানইয়ে ওয়েস্টের ফিরে আসা: ছয় বছর পর গ্র্যামিতে

বিশ্ববিখ্যাত র‍্যাপার, সংগীত প্রযোজক এবং ফ্যাশন ডিজাইনার কানইয়ে ওয়েস্ট দীর্ঘ ছয় বছর পর আবারও গ্র্যামির মঞ্চে হাজির হন। শেষবার তিনি ২০১৫ সালে গ্র্যামিতে পারফর্ম করেছিলেন ‘অনলি ওয়ান’ গানটি গেয়ে, যা তিনি লিখেছিলেন তার কন্যা নর্থ ও প্রয়াত মা ডোন্ডার জন্য। তবে এ বছর তিনি পুরস্কার জেতার চেয়েও বেশি আলোচনায় ছিলেন তার স্ত্রীর ফ্যাশন চয়েসের কারণে।

পোশাক বিতর্ক: বিয়াঙ্কার সাহসী ফ্যাশন চয়েস

৪৭ বছর বয়সী কানইয়ে ও তার ৩০ বছর বয়সী স্ত্রী বিয়াঙ্কা প্রথমে লালগালিচায় হাজির হন কালো পোশাকে। ওয়েস্ট পরেছিলেন কালো প্যান্ট ও টি-শার্ট, আর বিয়াঙ্কা গায়ে জড়িয়েছিলেন কালো পশমের ওভারকোট। তবে বিতর্কের জন্ম হয় তখন, যখন তিনি লালগালিচায় ওভারকোট খুলে ফেলেন এবং স্বচ্ছ, নুড-টোন ইনারে দেখা যায় তাকে। এটি ছিল অত্যন্ত চমকপ্রদ এবং অনেকে এটিকে ফ্যাশনের দৃষ্টিতে দেখলেও, অনেকেই এটি অশ্লীল ও বিতর্কিত হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

গ্র্যামি থেকে বের করে দেওয়ার গুঞ্জন

পোশাকের কারণে এই দম্পতিকে অনুষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলে গুঞ্জন ওঠে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। অনেকে বলেছিলেন, নিরাপত্তারক্ষীরা নাকি তাদের অনুষ্ঠান থেকে বের করে দিয়েছেন। তবে পরে জানা যায়, এমন কিছু ঘটেনি। তারা নিজেরাই ছবি তোলার পর গাড়িতে উঠে চলে যান।

ফ্যাশন ট্রেন্ড ও অন্যান্য তারকাদের পোশাক

শুধু বিয়াঙ্কাই নন, গ্র্যামির লালগালিচায় আরও কয়েকজন তারকার পোশাক নিয়েও হয়েছে আলোচনা। মডেল ক্রিসি টাইগেন পরেছিলেন ক্রিশ্চিয়ান সিরিয়ানোর ডিজাইন করা একটি স্ট্র্যাপলেস ফিশনেট গাউন, যা ছিল অনেকটাই স্বচ্ছ। অন্যদিকে, উইলো স্মিথ বেছে নিয়েছিলেন জমকালো বুস্টিয়ার ও ব্রিফ, সঙ্গে ভার্সাচের প্ল্যাটফর্ম পাম্প ও ম্যাককুইনের লম্বা টেইলার-কাট জ্যাকেট।

ফ্যাশনের স্বাধীনতা ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া

এই ধরনের ফ্যাশন চয়েস নিয়ে সাধারণত মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কেউ কেউ এটিকে ফ্যাশনের স্বাধীনতা বলে মনে করেন, আবার অনেকে বলেন এটি শালীনতার সীমা লঙ্ঘন করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে বিতর্ক হয়—একপক্ষে ছিলেন যারা এটিকে সাহসী ফ্যাশন হিসেবে প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে অনেকে এটিকে অগ্রহণযোগ্য বলে সমালোচনা করেছেন।

কানইয়ের মনোনয়ন ও সংগীত ক্যারিয়ার

এবারের গ্র্যামিতে কানইয়ে ওয়েস্ট ছিলেন সেরা র‍্যাপ গানের জন্য মনোনীত। যদিও তিনি কোনো পুরস্কার জেতেননি, তবে তার উপস্থিতি ও স্ত্রী বিয়াঙ্কার পোশাক পুরো অনুষ্ঠান জুড়েই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।

উপসংহার

গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডস কেবল সংগীতের জন্যই নয়, বরং ফ্যাশন ও সংস্কৃতির বড় একটি মঞ্চ। কানইয়ে ওয়েস্ট ও বিয়াঙ্কা সেনসরির উপস্থিতি এ বছর নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তাদের পোশাক ও উপস্থিতি নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তা আমাদের ফ্যাশনের স্বাধীনতা বনাম সামাজিক শালীনতার ধারণা নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে। এই ধরনের ঘটনাগুলো কেবল বিনোদনের জন্য নয়, বরং সমাজের মূল্যবোধের প্রতিফলন হিসেবেও কাজ করে।

Link copied!

সর্বশেষ :