ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে করতে পারলে জীবনযাত্রা সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় হয়। অর্থের অপচয় রোধ, সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব। তাই স্মার্ট অর্থ ব্যবস্থাপনার জন্য নিচের ৭টি কৌশল অনুসরণ করুন।
১. আয় বুঝে ব্যয় করুন
উপার্জিত অর্থ পুরোটা খরচ করা যেমন ঠিক নয়, তেমনি পুরোটা জমিয়ে রেখে কষ্ট করে দিন কাটানোও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এজন্য ৫০-৩০-২০ বাজেটিং পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন—
- মোট আয়ের ৫০% বাড়িভাড়া ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনায় খরচ করুন।
- ৩০% ব্যয় করুন বিনোদন ও জামাকাপড়ের মতো প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত খাতে।
- ২০% ঋণ পরিশোধ ও সঞ্চয়ের জন্য রাখুন।
২. বড় অঙ্কের খরচ কমান
অনেক সময় বাড়িভাড়া, বিদ্যুৎ বিল ও যাতায়াতে আয়ের বড় অংশ চলে যায়। তাই এই খরচ কমানোর কিছু কৌশল হলো—
- তুলনামূলক কম ভাড়ার বাসা নির্বাচন করুন।
- ব্যাচেলর হলে রুম শেয়ার করার কথা ভাবতে পারেন।
- বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হোন।
- নিয়মিত যাতায়াতের জন্য মেট্রোরেল এমআরটি পাস ব্যবহার করে ভাড়ার উপর ১০% ছাড় নিন।
৩. নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যয় কমান
প্রতি মাসে বাজার খরচ কমানোর কিছু কৌশল—
- বিশেষ ছাড় ও কুপনের সুযোগ নিন।
- অফ-সিজনে বা ডিসকাউন্ট সেলে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনুন।
- বড় পরিমাণে কেনাকাটা করে পাইকারি দামে কিনুন।
- মাসিক বাজার তালিকা তৈরি করে তবেই কেনাকাটা করুন।
৪. শখের কেনাকাটায় সচেতন হোন
শখের খরচ কমানোর কিছু উপায়—
- বই কেনার বদলে লাইব্রেরি থেকে ধার নিন।
- সিনেপ্লেক্সের বদলে অনলাইন সাবস্ক্রিপশন নিন।
- বাইরে খাওয়া কমিয়ে বাড়িতে রান্না করুন।
- স্টেশনারি ও অন্যান্য বিলাসদ্রব্য কেনার আগে চিন্তা করুন, আসলেই দরকার আছে কি না।
৫. ঋণ পরিশোধের পরিকল্পনা করুন
ঋণের বোঝা এড়াতে পরিকল্পিতভাবে পরিশোধ করুন—
- প্রথমে সবচেয়ে বেশি সুদের ঋণ পরিশোধ করুন।
- অথবা আগে ছোট ঋণগুলো শোধ করুন, যাতে ঋণমুক্ত হওয়ার অনুপ্রেরণা পান।
- মাসিক বাজেটে ঋণ পরিশোধের জন্য নির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দ রাখুন।
৬. জরুরি মুহূর্তের জন্য সঞ্চয় করুন
- অনাকাঙ্ক্ষিত খরচের জন্য কমপক্ষে তিন মাসের খরচ জমিয়ে রাখুন।
- জন্মদিন, বার্ষিকী বা ভ্রমণের খরচ সামলাতে প্রতিমাসে সামান্য পরিমাণ সঞ্চয় করুন।
- সঞ্চয়ের জন্য একটি আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রাখুন।
৭. যথাস্থানে বিনিয়োগ করুন
সঞ্চয় বাড়ানোর পাশাপাশি বিনিয়োগ করুন—
- সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ড-এ বিনিয়োগ করুন।
- সঞ্চয়পত্র কিনুন, যা নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত।
- জমি বা সম্পত্তি কিনে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করতে পারেন।
স্মার্ট অর্থ ব্যবস্থাপনা আপনাকে আর্থিক সুরক্ষা দেবে ও ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে। পরিকল্পিত ব্যয়, সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মাধ্যমে আজই আপনার আর্থিক পরিকল্পনা সাজিয়ে নিন!
আপনার মতামত লিখুন :