সন্তানের কাছে মা–বাবাই প্রথম শিক্ষক। আর তাঁরাই সন্তানকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করতে পারেন। তাই সন্তানের অভিভাবক হিসেবে মা–বাবার দায় প্রথম। সাধারণ আদবকেতা থেকে শুরু করে ভালো মানুষ, ভালো বন্ধু, সঙ্গী আর রাষ্ট্রের সুনাগরিক হওয়ার শিক্ষা একটি শিশু প্রথম পায় ঘর থেকেই। আপনার সন্তানকে যে ৫টি বিষয় শেখাবেন, জেনে নেওয়া যাক-
১. সুন্দর করে কথা বলা, গল্প করা
গল্প বলা অনেক দারুণ একটা গুণ। আপনার সন্তানকে অনুপ্রেরণামূলক গল্প শোনান। পাশাপাশি তাকে কীভাবে গল্প বলতে হয়, সেটাও শেখান। রাতে গল্প শোনাতে শোনাতে ঘুম পাড়ান। বই পড়তে শেখান। এ কারণে নিজে বই পড়ুন। আপনার সন্তান যদি বই পড়তে পারে আর গল্প করতে পারে, তাহলে বাকি জীবনে তাঁকে আর একাকিত্বে ভুগতে হবে না। গল্প বলা, কথা বলা, নিজের যুক্তিগুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা একটা শিল্প। এই শিল্প সবাই আয়ত্ত করতে পারে না। অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষও অন্য মানুষের সামনে কথা বলতে ইতস্তত বোধ করেন, জড়তা কাজ করে। আপনার সন্তানকে বলতে দিন। সন্তানের কথা মন দিয়ে শুনুন। জনসম্মুখে কীভাবে কথা বলতে হয় শেখান। তাহলে আত্মবিশ্বাসেরও অভাব হবে না। তৈরি হবে না হীনম্মন্যতা।
২. দাবা খেলা
দাবা খেলার রয়েছে বহুমাত্রিক উপকারিতা। মস্তিষ্ককে কাজে লাগানো শেখাতে দাবা খেলার বিকল্প নেই। দাবা খেলার মাধ্যমে আপনার শিশু বিভিন্নভাবে ভাবতে শেখে। সন্তানকে ছোট থেকে মানসিকভাবে শক্তিশালী করতে দাবা খেলা হতে পারে সর্বোৎকৃষ্ট মাধ্যম। দাবা কাজের প্রতি একাগ্রতা বাড়ায়, তেমনি বাড়ায় স্মৃতিশক্তি। আবেগ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি চাপ সহ্য করার সক্ষমতা তৈরি করে। তাই ‘একের ভেতর অনেক’ সুবিধা পেতে, অন্য দশজনের চেয়ে এগিয়ে রাখতে আপনার সন্তানকে দাবা খেলা শেখান।
৩. ‘ধন্যবাদ’ দিতে শেখান
অন্যকে ছোট্ট একটা ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমেই আপনি কৃতজ্ঞতার চর্চা শেখাতে পারেন। এতে সম্পর্ক সহজ, সুন্দর থাকে। এই ছোট্ট চর্চার মধ্য দিয়েই জীবন অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।
৪. শেখান, কীভাবে কোনো জিনিস বিক্রি করতে হয়
মনে করুন, আপনার শিশু ছবি আঁকতে পারে। আপনি তাকে সেটা বিক্রি করতে শেখান। আপনার শিশুর ভেতর যে গুণ আছে, সেটাকে ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করতে শেখান, স্বাবলম্বী হতে শেখান। যোগাযোগের দক্ষতা বৃদ্ধি, আত্মবিশ্বাস তৈরি, কোনো জিনিসের মূল্যায়ন, অর্থনৈতিক সচেতনতা তৈরি, উদ্যোক্তার মানসিকতা তৈরি করতে আপনার সন্তানকে ছোট থেকেই শেখান, কীভাবে কোনো জিনিস বিক্রি করতে হয়। এটা আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ সুন্দর করতে অনেক বেশি কার্যকর হবে।
৫. প্রকৃতি, পোষা প্রাণীকে ভালোবাসা
যেকোনো ভালো মানুষের স্বভাবজাত গুণ হলো তিনি প্রকৃতিকে, পোষা প্রাণীকে ভালোবাসবেন। প্রকৃতিপ্রেমী মানুষেরা প্রকৃতির পাশাপাশি প্রকৃতির উপাদানগুলোর প্রতিও যত্নশীল হয়। আপনার সন্তানের ভেতর প্রাণ, প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তুলুন। সবুজের প্রতি যত্নশীল করে তুলুন।
সূত্র: বিজনেস ব্রাইট
আপনার মতামত লিখুন :