ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী একটি বাসে চলন্ত অবস্থায় ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় লুট হওয়া নগদ টাকা ও কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার রাতে, যখন ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসা ইউনিক রোড রয়েলসের ‘আমরি ট্রাভেলস’ বাসে ডাকাত দল হানা দেয়। যাত্রীদের ভাষ্যমতে, সোমবার রাত ১১টায় বাসটি ঢাকার গাবতলী থেকে যাত্রা শুরু করে। রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে বাসে ডাকাতেরা উঠে যাত্রীদের জিম্মি করে এবং তিন ঘণ্টা ধরে সর্বস্ব লুট করে।
এ সময় ডাকাতরা যাত্রীদের মোবাইল, নগদ টাকা, মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নেয় এবং নারীদের শ্লীলতাহানি করে। পরবর্তী সময়ে রাত ৩টা ৫২ মিনিটে বাসটি ডাকাতদের নির্ধারিত স্থানে এনে থামানো হয় এবং ডাকাতরা বাস থেকে নেমে যায়।
ডাকাতি ও নির্যাতনের শিকার যাত্রীরা প্রথমে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় যান। তবে অভিযোগ রয়েছে যে, সেসময় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উপস্থিত না থাকায় তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় গিয়ে বাসটি নিয়ে যাত্রীরা মামলা করার চেষ্টা করেন।
ঘটনার তিন দিন পর, শুক্রবার, অবশেষে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা ওমর আলী বাদী হয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় একটি মামলা করেন।
ডাকাতির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বাসের চালক বাবলু ইসলাম (৩৫), চালকের সহকারী সুমন ইসলাম (৩৫) এবং সুপারভাইজার মাহবুব আলম (৩৮)-কে আটক করে পুলিশ। পরে নাটোরের বড়াইগ্রাম আমলি আদালতে তাদের হাজির করা হয়।
তবে শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
মির্জাপুর থানার ওসি মো. মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন, এই ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তদন্ত চলমান রয়েছে। আরও তথ্য পরবর্তী সময়ে জানানো হবে।
চলন্ত বাসে এমন ডাকাতির ঘটনা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে গণপরিবহনে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে, কারণ সময়মতো ব্যবস্থা না নেওয়ায় অপরাধীরা সহজেই পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে।
এ ঘটনায় যাত্রীরা কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এবং সড়কে নিরাপত্তা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :