রাজধানীর মোহাম্মদপুর এ সাম্প্রতিককালে বেড়ে চলা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ থেকে প্রতিটি হাউজিং এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করবে। এই ক্যাম্পগুলো থেকে সেনাসদস্যরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। শনিবার রাত ১টার দিকে বছিলা এলাকায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান ২৩ ইস্ট বেঙ্গলের উপ-অধিনায়ক মেজর নাজিম আহমেদ।
বিশেষ অভিযান ও গ্রেফতার কার্যক্রম
শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া এ অভিযানে সেনাবাহিনী মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস দমনে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে এবং ইতোমধ্যে ৪৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত স্থানীয় কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা রয়েছে। বিশেষ অভিযানে র্যাব ও পুলিশের সদস্যরাও সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করছে। আটক ব্যক্তিদের স্থানীয় থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
কিশোর গ্যাং ও অপরাধমূলক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা
সংবাদ সম্মেলনে মেজর নাজিম জানান, মোহাম্মদপুর এলাকায় বর্তমানে ২৭-২৮টি সক্রিয় কিশোর গ্যাং রয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য জেনেভা ক্যাম্প এলাকায় কার্যক্রম পরিচালনা করে। আটককৃত ৪৫ জনের মধ্যে ১৫-১৬ জনকে গ্যাং লিডার বা গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যারা চাঁদাবাজি ও ডাকাতির মতো অপরাধে সম্পৃক্ত। এদের দ্বারা সাধারণ মানুষ, অফিসগামী ব্যক্তি ও শিক্ষার্থীরা বারবার ভুক্তভোগী হয়েছেন।
অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে সেনাবাহিনী মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন হাউজিং এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করবে। এই ক্যাম্পগুলো দু-তিনটি হাউজিংয়ের মধ্যে একটি করে স্থাপন করা হবে যাতে প্রতিটি এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা সম্ভব হয়। সেনাবাহিনী সদস্যরা প্রতিটি ক্যাম্প থেকে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে স্থানীয় সন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কার্যক্রম প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবেন।
সম্প্রতি সংঘটিত ডাকাতি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড
গত শুক্রবার মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকায় একটি সুপারশপে এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের দোকানে সংঘটিত ডাকাতির ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় যে ডাকাতদের হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল এবং তারা দুইটি স্থানে হামলা চালিয়ে নগদ অর্থ লুট করে। সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে ডাকাতির ঘটনায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত মো. আসলাম ওরফে রুবেলকে (৩২) শনিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টায় আটক করা হয়।
এখন থেকে মোহাম্মদপুরের সব হাউজিং এলাকায় সেনাবাহিনী ও র্যাবের তত্ত্বাবধানে স্থাপিত ক্যাম্পগুলোতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে কার্যক্রম চলবে।
আপনার মতামত লিখুন :