সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি আইনজীবী নাহিদ সুলতানার (যুথী) ধানমন্ডির বাসায় পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালালেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। নাহিদ সুলতানা যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস (পরশের) স্ত্রী।
ওই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে পুলিশের রমনা অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার আখতারুজ্জামান আজ শনিবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, নাহিদ সুলতানার বাসায় অভিযান চালালেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পুলিশ তাঁকে খুঁজছে।
অভিযান পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত একজন ডিবি কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল শুক্রবার বিকেলে শাহবাগ থানায় মামলা হওয়ার পর রাতে ও আজ শনিবার নাহিদ সুলতানাকে গ্রেপ্তার করতে তাঁর বাসায় একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে। তাঁকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় শাহবাগ থানার পুলিশ ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) গতকাল রাতে রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরী, আইনজীবী কাজী বশীর আহম্মেদ, হাসানুজ্জামান, তরিকুল ইসলাম ও এনামুল হক। আজ তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য মামলার প্রধান আসামি আইনজীবী নাহিদ সুলতানার মুঠোফোনে আজ একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
এদিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনায় হওয়া মামলাটির তদন্তভার আজ দুপুরে শাহবাগ থানা থেকে ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া পাঁচ আসামিকে ডিবি জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
গতকাল ভোরের দিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনায় সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এস আর সিদ্দিকী সাইফ তাঁকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বিকেলে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। মামলায় আইনজীবী নাহিদ সুলতানা ও বিএনপি-সমর্থিত প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী রুহুল কুদ্দুসসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলায় এজাহারভুক্ত অপর আসামিরা হলেন আইনজীবী মো. জাকির হোসেন ওরফে মাসুদ, শাকিলা রৌশন, কাজী বশির আহম্মেদ, ওসমান, আরিফ, সুমন, তুষার, রবিউল, চৌধুরী মৌসুমী ফাতেমা (কবিতা), সাইদুর রহমান জুয়েল, অলিউর, জয়দেব নন্দী, মাইন উদ্দিন রানা, মশিউর রহমান সুমন, কামাল হোসেন, আসলাম রাইয়ান, তরিকুল ও সোহাগ। এ ছাড়া মামলায় ৩০ থেকে ৪০ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোট শেষ হলেও ভোট গণনা নিয়ে গতকাল ভোরে হট্টগোল ও মারধরের ঘটনা ঘটে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল আর ভোট গণনা হয়নি। আজ বেলা তিনটার দিকে সমিতি ভবনের মিলনায়তন ও তিনটি হলরুমে একযোগে ভোট গণনা শুরু হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :