বাংলাদেশ বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

‘কবজিকাটা’ বাহিনীর প্রধান আনোয়ারসহ তিনজন গ্রেপ্তার

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫, ০৪:২০ পিএম

‘কবজিকাটা’ বাহিনীর প্রধান আনোয়ারসহ তিনজন গ্রেপ্তার

র‍্যাব বলছে, গ্রেপ্তার এই দুই ব্যক্তির নাম মো. ইমন ও মো. ফরিদ। তাঁরা আনোয়ারের সহযোগী

 র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) রাজধানীর উপকণ্ঠ কেরানীগঞ্জ থেকে আলোচিত ‘কবজিকাটা বাহিনীর’ প্রধান আনোয়ার হোসেন (৩৬) এবং তার দুই সহযোগী মো. ইমন (২০) ও মো. ফরিদ (২৭)-কে গ্রেপ্তার করেছে। র‍্যাবের তথ্য অনুযায়ী, আনোয়ার এবং তার বাহিনী বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য কুখ্যাত। বিশেষ করে, মানুষের কবজি কেটে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার কারণে তারা আলোচনায় আসে।

র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আজ মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-২-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক খালিদুল হক হাওলাদার জানান, আনোয়ারের বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি, অস্ত্র ও মাদক আইনের ৯টি মামলা রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকায় একাধিক হত্যাচেষ্টা ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় তার নেতৃত্বে পরিচালিত বাহিনী জড়িত ছিল।

খালিদুল হক বলেন, “এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘাত বাড়তে থাকে। সম্প্রতি মোহাম্মদপুরে এক যুবকের কবজি বিচ্ছিন্ন করে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই আনোয়ার ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা হয়।”

আনোয়ারের বাহিনী সাধারণত হামলার আগে এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করত এবং যানজট তৈরি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধা দেওয়ার আশঙ্কা এড়িয়ে যেত। এরপর তারা ফিল্মি স্টাইলে টার্গেটকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করত এবং হাতের কবজি কেটে নিত। এই কর্মকাণ্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করত তারা।

র‍্যাবের অনুসন্ধান অনুযায়ী, আনোয়ারের বাহিনীর হামলার শিকার হয়ে অন্তত ৭ থেকে ৮ জন পঙ্গু হয়েছেন। কেউ হাত হারিয়েছেন, কেউ পা হারিয়েছেন। অনেক ভুক্তভোগী এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। এমনকি ভয়ে অনেকে মামলা করতেও সাহস পাননি। যারা মামলা করেছেন, তাদেরও বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে।

র‍্যাব বলছে, গ্রেপ্তার এই ব্যক্তির নাম আনোয়ার হোসেন
র‍্যাব বলছে, গ্রেপ্তার এই ব্যক্তির নাম আনোয়ার হোসেন

র‍্যাবের দেওয়া তথ্যমতে, আনোয়ার হোসেন ২০০৫ সালে বাগেরহাট থেকে ঢাকায় আসেন। জীবিকার তাগিদে তিনি খাওয়ার পানি পরিবহনের কাজ শুরু করেন। তবে পরে ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। ২০২৪ সালে আনোয়ার মানুষের কবজি কেটে তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এই ঘটনা তাকে এবং তার বাহিনীকে ‘কবজিকাটা বাহিনী’ নামে পরিচিত করে তোলে।

র‍্যাব জানিয়েছে, আনোয়ার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে তাদের অপরাধমূলক কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্য সদস্যদের খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করা হবে। র‍্যাবের এই অভিযান রাজধানীতে সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপ হিসেবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই গ্রেপ্তারের মাধ্যমে র‍্যাব সন্ত্রাসী কার্যক্রমের লাগাম টানতে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা চেয়ে র‍্যাব জনগণকে যেকোনো ধরনের অপরাধমূলক তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

Link copied!

সর্বশেষ :