উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন সম্প্রতি এক নতুন অদ্ভুত আদেশ জারি করেছেন, যার মধ্যে দেশটির জনপ্রিয় খাবার `হট ডগ` `বুদ্ধা জিগে` এবং `সসেজ` নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিবাহ বিচ্ছেদেও থাকছে শাস্তি। মূলত পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব কমানোর জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিম জং উন মনে করেন, এই খাবারগুলো মার্কিন প্রভাবের অধীনে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশ করেছে এবং এটি `পুঁজিবাদের` প্রতিনিধিত্ব করে। তাই তিনি দেশের নাগরিকদের জন্য এই খাবারগুলো খাওয়া, বিক্রি এবং রান্না করা নিষিদ্ধ করেছেন। কোনো ব্যক্তি যদি এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তবে তাঁকে উত্তর কোরিয়ার কুখ্যাত শ্রম শিবিরে পাঠানো হবে।
`সসেজ` এ নিষেধাজ্ঞা
হট ডগের পাশাপাশি কিম জং উন সসেজও নিষিদ্ধ করেছেন। সসেজ সাধারণত স্ট্রিট ফুড হিসেবে বিক্রি করা হয় তবে এখন থেকে আর উত্তর কোরিয়ায় পাওয়া যাবে না এই খাবার। প্রশাসন জনগণের ওপর কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে এবং সসেজ বিক্রি, প্রস্তুত অথবা খাওয়ার চেষ্টা করলে কঠোর শাস্তি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
`বুদ্ধা জিগে` নামক খাবারে নিষেধাজ্ঞা
বুদ্ধা জিগে (যাকে দক্ষিণ কোরিয়ায় আর্মি বেজ স্টু বলা হয়) উত্তর কোরিয়ায় একটি জনপ্রিয় খাবার হয়ে উঠেছিল। এটি মূলত নুডলস, তাদের ট্রেডিশনাল কিমচি এবং অন্যান্য উপাদান দিয়ে তৈরি হয়, যার মধ্যে হট ডগ ব্যবহার করা হয়। ২০১৭ সালে এই খাবারটি দক্ষিণ কোরিয়া থেকে উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশ করেছিল এবং ধীরে ধীরে তা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। তবে কিম জং উন উত্তর কোরিয়াকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রভাব মুক্ত করতে এই খাবারের উৎপাদন, পরিবেশন এবং বিক্রি নিষিদ্ধ করেছেন।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে শাস্তি
কিম জং উন প্রশাসন স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, যদি কেউ এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এবং বুদ্ধা জিগে বা হট ডগ বিক্রি করতে বা খেতে ধরা পড়ে তাহলে তাদেরকে শ্রম শিবিরে নির্বাসিত করা হবে। প্রশাসন জনগণের ওপর নজরদারি আরও বাড়িয়েছে এবং বাজার ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিবাহ বিচ্ছেদে শাস্তি
কিম জং উন শুধু খাবারের উপরই নিষেধাজ্ঞা দেননি, তিনি দম্পতিদের বিবাহ বিচ্ছেদের ব্যাপারেও কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। উত্তর কোরিয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদকে ‘সমাজবিরোধী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং যেকোনো দম্পতি যদি বিবাহ বিচ্ছেদ করতে চান তাহলে তাঁদের অন্তত ৬ মাসের জন্য শ্রম শিবিরে পাঠানো হতে পারে।
উত্তর কোরিয়ার সামাজিক ও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ
এই পদক্ষেপগুলো এটাই প্রমান করে যে কিম জং উন দেশের নাগরিকদের সামাজিক জীবন, খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যক্তিগত জীবনযাপন সব কিছুই কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছেন। আরও প্রমান করে যে কিম জং উন পশ্চিমা প্রভাবকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করতে চান এবং নিজেদের সংস্কৃতি ও সমাজকে পশ্চিমা প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে চান।
আপনার মতামত লিখুন :