প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর উপদেষ্টা ইলন মাস্ক সরকারি কর্মসংখ্যা কমানোর পদক্ষেপ জোরদার করেছেন। শুক্রবার এক ঘোষণায় জানানো হয়, ৯,৫০০-এর বেশি কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে। ফেডারেল সরকারের বিভিন্ন বিভাগ—ভূমি ব্যবস্থাপনা, প্রবীণ সেনাদের সেবা, কৃষি, স্বাস্থ্য ও মানবসেবা—এমনকি কিছু স্বাধীন সংস্থা পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তের আওতায় পড়েছে।
চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের চাকরি হারানো
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চুক্তিভিত্তিক ও নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কনজ্যুমার ফাইন্যান্সিয়াল প্রটেকশন ব্যুরোসহ বেশ কয়েকটি সংস্থা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। এমনকি কর সংগ্রহকারী ইন্টারনাল রেভিনিউ সার্ভিস (IRS) আগামী সপ্তাহে আরও কয়েক হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা ১৫ এপ্রিল আয়কর দাখিলের সময়সীমার আগে নাগরিকদের জন্য সমস্যার কারণ হতে পারে।
স্বেচ্ছায় পদত্যাগ ও নতুন ছাঁটাইয়ের পার্থক্য
রয়টার্স ও মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সম্প্রতি ৭৫ হাজার কর্মী স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। তবে বর্তমান ছাঁটাই তাদের থেকে আলাদা এবং সরকারের ব্যয় সংকোচনের বড় উদ্যোগের অংশ।

ট্রাম্প ও মাস্কের যুক্তি
ট্রাম্প বলেছেন, সরকারি অপচয়, দুর্নীতি ও অকার্যকর খরচ কমাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৩৬ ট্রিলিয়ন ডলারের ঋণ ও ১.৮ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজেট ঘাটতি সামলাতে এ ধরনের কৃচ্ছ্রসাধনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
নতুন মন্ত্রণালয় ও মাস্কের ভূমিকা
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ট্রাম্প ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সি’ নামে নতুন বিভাগ তৈরি করেছেন, যার প্রধান ইলন মাস্ক। মাস্কের দাবি, তিনি ১ ট্রিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করবেন। সমালোচকরা বলছেন, তিনি সরকারি ব্যবস্থায় অপ্রত্যাশিত হস্তক্ষেপ করছেন এবং ট্রাম্পের নীতিতে অতিরিক্ত প্রভাব বিস্তার করছেন।
সমালোচনা ও প্রতিক্রিয়া
ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, কংগ্রেসের সাংবিধানিক কর্তৃত্ব ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকানরা এই পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, নতুন সংস্থা একটি আর্থিক নিরীক্ষা বিভাগ হিসেবে কাজ করছে এবং অতিরিক্ত ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন ফেডারেল সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনা করছে।
এই ব্যাপক ছাঁটাইয়ের ফলে সরকারি পরিষেবা ও অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে বিতর্ক চলছেই।
আপনার মতামত লিখুন :