বাংলাদেশ শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

স্পেনে আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৯৫ ছাড়িয়েছে, তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২৪, ১১:১২ এএম

স্পেনে আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৯৫ ছাড়িয়েছে, তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা

স্পেনে ইতিহাসের ভয়াবহ বন্যা।

স্পেনের পূর্বাঞ্চলীয় ভ্যালেন্সিয়া প্রদেশ ও আশপাশের এলাকায় ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৯৫ ছাড়িয়েছে। অত্যধিক বৃষ্টির কারণে আকস্মিক এ বন্যাকে পাঁচ দশকের মধ্যে দেশটিতে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বন্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বন্যার প্রভাবে এখনো বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

এবারের বন্যাকে স্পেনের ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এর আগে ১৯৭৩ সালে দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে এক প্রাণঘাতী বন্যায় ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

বন্যার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি

গত মঙ্গলবার ভ্যালেন্সিয়ায় মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলে হঠাৎ বন্যা দেখা দেয়। স্পেনের আবহাওয়া সংস্থা অ্যামেট জানায়, চিভা শহরে মাত্র আট ঘণ্টায় প্রায় এক বছরের সমান বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। আকস্মিক পানির তোড়ে রাস্তাঘাট ও হাইওয়েগুলো নদীতে পরিণত হয়, এতে রাস্তাঘাট, সেতু, ভবন এবং গাড়ি তলিয়ে যায়। অনেক মানুষ বাড়ির ছাদে উঠে এবং গাছ ধরে ঝুলে ঝুলে জীবন রক্ষা করেন।

বিশেষ করে ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলে বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি লক্ষ্য করা গেছে, যেখানে মৃত্যুর সংখ্যা অন্তত ৯২ জন। এছাড়াও ভ্যালেন্সিয়ার পাশের কাস্তিলা-লা-মানচা অঞ্চলে দুইজন এবং মালাগা শহরে এক ব্রিটিশ নাগরিক উদ্ধারের পর হাসপাতালে মারা যান।

সরকারি পদক্ষেপ ও সমালোচনা

বন্যায় হতাহতদের স্মরণে স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন। বুধবার দেশটির পার্লামেন্টে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সানচেজ তার ভাষণে বলেন, ‍‍`গোটা স্পেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে। আমরা আপনাদের ছেড়ে যাব না‍‍`। তবে দুর্যোগ সতর্কতা জারি করতে সরকারের দেরি হওয়ায় বেশ কিছু স্থানীয় নাগরিক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ বন্যার পানি বাড়ার পরেও সঠিক সময়ে সতর্কতা না দেওয়ায় বহু মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়ে।

উদ্ধার অভিযান ও আন্তর্জাতিক সহায়তা

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় এক হাজারেরও বেশি সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনী ও উদ্ধারকর্মীরা বন্যাকবলিতদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। বন্যার কারণে রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেছে, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় দুর্গম এলাকায় আটকা পড়া অনেক মানুষকে উদ্ধার করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও উদ্ধার অভিযান সমন্বয়ের জন্য কপার্নিকাস স্যাটেলাইট ব্যবস্থা চালু করেছে। অন্যান্য প্রতিবেশী দেশও সহায়তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে স্পেন সরকার।

 

 

Link copied!

সর্বশেষ :