সারাদেশে কমবেশি বৃষ্টি হলেও তীব্র খরায় ভুগছে জলকাঠি। একটানা আগুনে পেয়ারা ফুল জ্বলছে। প্রখর রোদে পুড়ে যায় কৃষকের স্বপ্ন। এমনকি কৃষকরা যখন ঋণ নেয় এবং সবজি বাগানে বিনিয়োগ করে, তারা ফলন তীব্র হ্রাসের ভয়ে বিভ্রান্ত হয়।
দেশি জাতের পেয়ারা চাষে ঝালকাঠির খ্যাতি দেশজুড়ে। অগণিত কৃষক পরিবারের প্রধান আয়ের মাধ্যমও পেয়ারা চাষ। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি গাছে গাছে ফুল-কুড়িতে ছেয়ে গেলেও লাগাতার তীব্র খরায় তা ঝড়ে পড়ছে। বৃষ্টির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে থোকায় থোকায় ফুল-কুড়ি।
রোদে শুকিয়ে পেয়ারার আকার যেমন ছোট হয়েছে, তেমনি পড়েছে কালো কালো ছিট পড়া রোগ। তার ওপর লবণ পানির নতুন আগ্রাসনে পেয়ারার স্বাদও কমে যাচ্ছে। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে পেয়ারা চাষে মাটি দেয়া সহ পরিচর্যায় কৃষক যে পুঁজি খাটিয়েছেন তা কোন ভাবেই এবার উঠবে না বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া যারা ঋণ করে পুঁজি সংগ্রহ করেছেন তাদের যেন মরার উপর খড়ার ঘা। এপ্রিলের শুরু থেকেই অনাবৃষ্টির সঙ্গে তীব্র দাবদাহে অন্যান্য মৌসুমি ফল এবং শাক-সবজিরও একই অবস্থা।
ঝালকাঠি সদরের ভীমরুলি গ্রামের কৃষক মনতোষ হালদার বলেন, এমন রোদ এর আগে কখনও দেখিনি। জমির মাটিও ফেঁটে চৌচির। গত দুই-তিন বছর ধরেই তাপমাত্রা বাড়লেও এবছরের মত আর অবস্থা আগে কখনও হয়নি। ফলে পেয়ারার ফুল-কুড়ি সব ঝড়ে পড়ে যাচ্ছে। এলাকার অসংখ্য কৃষক এখন দিশেহারা।শতদশকাঠী গ্রামের জগদীশ ঢালি বলেন, ঋণ করে শ্রমিক খাটিয়ে জমিতে মাটি দিয়েছি। ভেবেছিলাম মৌসুমে পেয়ারার আয় দিয়ে ঋণ শোধের পর যা থাকবে তা দিয়ে সংসারের অভাব দূর হবে। কিন্তু এবার সেগুড়ে বালি।
পোষন্ডা গ্রামের কৃষক রহমত আলী বলেন, পেয়ারা আকারে ছোট হয়েছে। পাশাপাশি পেয়ারায় ছিট ছিট দাগ পড়েছে। লবণ পানি আর অনাবৃষ্টিতে এ বছর এলাকার পেয়ারা চাষিরা চরম লোকসানে পড়বে।প্রসঙ্গত, কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্যমতে ঝালকাঠি জেলায় এ বছর ৫৬২ হেক্টরে জমিতে পেয়ারার ফলন হয়েছে। জুলাই-আগস্ট মাসে এই ফল সংগ্রহ চলবে।
আপনার মতামত লিখুন :