ব্যস্ত জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে লিভারের সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। যদিও লিভার সুস্থ রাখার জন্য অনেক ধরনের ডায়েট রয়েছে, তবে সহজ সমাধান হিসেবে কিছু ফল খাওয়া দারুণ কার্যকর হতে পারে। ফ্লোরিডার গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ড. জোসেফ সালহাব লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য পাঁচটি সেরা ফলের কথা উল্লেখ করেছেন। তবে তার আগে চলুন জেনে নিই, লিভার হাইড্রেট রাখা কেন জরুরি।
লিভার হাইড্রেট রাখা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো লিভারেরও সঠিকভাবে কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত পানির প্রয়োজন হয়। হাইড্রেটেড লিভার টক্সিন দূর করে, হজমে সাহায্য করে এবং বিপাক প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখে। অন্যদিকে, পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন লিভারের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে, যা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই লিভারের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে। আসুন জেনে নিই লিভারের জন্য উপকারী পাঁচটি ফল সম্পর্কে—
১. ডালিম
টক-মিষ্টি স্বাদের ডালিম লিভারের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি পুনিক্যালাজিন এবং এলাজিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা প্রদাহ-বিরোধী, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত। এই উপাদানগুলো রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, যা লিভারের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
২. বেরি জাতীয় ফল
ছোট হলেও ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি ও রাস্পবেরির মতো বেরি জাতীয় ফল লিভারের জন্য অত্যন্ত কার্যকর। এসব ফলে প্রোঅ্যান্থোসায়ানিডিন নামক প্রাকৃতিক যৌগ রয়েছে, যা রক্তনালীকে শিথিল করে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। এতে লিভার সহজেই প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে এবং সুস্থ থাকে।
৩. আঙুর
ফ্ল্যাভোনয়েড সমৃদ্ধ আঙুর লিভারের জন্য দারুণ উপকারী। এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সাহায্য করে, যার ফলে লিভার বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে পারে এবং সঠিকভাবে কাজ করতে পারে। লাল, সবুজ বা কালো আঙুর—যে কোনো ধরনের আঙুরই লিভারের জন্য ভালো।
৪. তরমুজ
রসালো ও হাইড্রেটিং তরমুজ লিভারের কার্যকারিতা বাড়াতে দারুণ সহায়ক। তরমুজে উচ্চমাত্রার পানি থাকায় এটি স্বাভাবিকভাবে লিভারকে হাইড্রেটেড রাখে। পাশাপাশি, এটি নাইট্রিক অক্সাইড উৎপাদন বাড়িয়ে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং লিভারকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে সাহায্য করে।
৫. বিট
বিটে থাকা উচ্চমাত্রার নাইট্রেট ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারের জন্য বিশেষ উপকারী। এটি রক্ত প্রবাহ উন্নত করে, লিভারের ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়া সহজ করে এবং বিপাকক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখে। এছাড়া, প্রদাহ কমানোর মাধ্যমে লিভারের কোষ সুরক্ষিত রাখতেও বিট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
শেষ কথা
লিভারের সুস্থতা বজায় রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং লিভার-বান্ধব এসব ফল খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলে লিভারের কার্যকারিতা আরও ভালো হবে, যা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও সাহায্য করবে।
আপনার মতামত লিখুন :