দীর্ঘদিনের বিষণ্নতা কখনো কখনো মারাত্মক মানসিক রোগে রূপ নেয়। গবেষণায় উঠে এসেছে, হতাশা ও নিঃসঙ্গতার কারণে দেশে মানসিক রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতাও।
বিষণ্নতার লক্ষণগুলো নানাবিধ হতে পারে। কখনো মুড অফ, শরীর খারাপ, কিংবা বুকে ব্যথার মতো অনুভূতি। কখনো আবার মনে হতে পারে, জীবনের আর কোনো অর্থ নেই। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই অবস্থাকেই বিষণ্নতা বলা হয়।
মানসিক রোগের লক্ষণ
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের গবেষণা বলছে, দেশের ১৮ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষজ্ঞরা জানান, মানসিক রোগের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ নেই। তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো:
- দীর্ঘ সময় মন খারাপ থাকা
- ঘুমের অভাব বা অনিদ্রা
- কর্মস্পৃহা কমে যাওয়া
- খাবারে অরুচি
- ভালো কিছু শোনার পরও ভালো না লাগা
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
চিকিৎসকরা বলেন, বিষণ্নতা যদি দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, তবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। এ সময় কাউন্সিলিং খুবই কার্যকর হতে পারে। তবে দেশে মানসিক রোগের চিকিৎসা খরচ বেশি হওয়ায় অনেকেই এ সেবা নিতে পারেন না।
চিকিৎসা ও প্রতিরোধের উপায়
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. তাইয়েব ইবনে জাহাঙ্গীর বলেন, মানসিক রোগীদের মধ্যে আচরণগত পরিবর্তন দেখা যায়। যেমন—ঘুমের অভাব, কর্মস্পৃহা হ্রাস, কিংবা আত্মহত্যার চিন্তা। সময়মতো চিকিৎসা না করলে এই সমস্যা আরও বাড়তে পারে। তবে সাইকিয়াট্রি ও সাইকোলজিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ ও প্রয়োজনীয় কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে এ সমস্যা পুরোপুরি নিরাময় সম্ভব।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, দেশের মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় উন্নয়ন ঘটাতে সরকারি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ পর্যায়ে কাউন্সিলিং সেবা চালু করা হলে এই সমস্যা অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব
বিষণ্নতা ও মানসিক সমস্যার গুরুত্ব অনুধাবন করে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। জীবনধারায় ইতিবাচক পরিবর্তন, সচেতনতা বৃদ্ধি, এবং সরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি সম্ভব।
আপনার মতামত লিখুন :