কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের লাবণী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী ‘বহুভাষিক উৎসব-২০২৫’। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সেল আয়োজিত এই উৎসবে অংশ নিচ্ছেন ২১টি জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীরা। বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির সংমিশ্রণে সাজানো এই উৎসব মাতৃভাষা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আয়োজন করা হয়েছে।
">
উৎসবে অংশগ্রহণকারী জাতিগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে রয়েছে চাকমা, মারমা, ম্রো, ত্রিপুরা, লুসাই, খুমি, বম, খেয়াং, চাক, পাংখোয়া, তঞ্চঙ্গ্যা, মণিপুরি, সাঁওতাল, মাহালী, গারো, হাজং, কোচ, রাখাইনসহ অন্যান্য সম্প্রদায়। এসব সম্প্রদায়ের শিল্পীরা তাদের নিজস্ব ভাষায় গান, আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করবেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে।
শুক্রবার বিকেলে উৎসবের উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। সভাপতিত্ব করবেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন। অনুষ্ঠানের সার্বিক সমন্বয় এবং পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন শিল্পকলা একাডেমির উপপরিচালক ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম শামীম আকতার।
উৎসবের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে এস এম শামীম আকতার বলেন, "আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মূল প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এতে বাংলা ভাষার পাশাপাশি অন্যান্য মাতৃভাষাকেও সম্মান জানানো হবে। প্রথমবারের মতো কক্সবাজার সৈকতে এই আয়োজনের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাষাভাষী জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক কার্যক্রমকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার সুযোগ সৃষ্টি হবে।"
তিনি আরও বলেন, "এটি কেবল বিনোদনমূলক উৎসব নয়, বরং বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের পরিচয় তুলে ধরার একটি উদ্যোগ। আমরা চাই, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীরা তাদের সৃজনশীলতা ও সংস্কৃতিকে সবার সামনে তুলে ধরুক।"
কক্সবাজার সৈকতে শুরু হচ্ছে ২১ জাতিগোষ্ঠীর উৎসব। আজ বিকেলে মহড়ায় মারমা সম্প্রদায়ের শিল্পীরা
উৎসবের আয়োজকরা আশা করছেন, কক্সবাজারে ভ্রমণে আসা পর্যটকরাও এই উৎসব উপভোগ করবেন। পর্যটকদের কাছে এটি একটি নতুন অভিজ্ঞতা হবে যেখানে তারা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা একসঙ্গে দেখতে পাবেন। স্থানীয় বাসিন্দারাও উৎসবে অংশ নিয়ে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে পারবেন।
এই উৎসব বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির বন্ধন আরও জোরদার করতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন আয়োজকরা। ‘বহুভাষিক উৎসব-২০২৫’-এর মাধ্যমে মাতৃভাষার মর্যাদা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বাংলাদেশে এক নতুন অধ্যায় রচিত হবে।
আপনার মতামত লিখুন :