বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান শুক্রবার এ তথ্য জানান। ঘূর্ণিঝড়টির নামকরণ করা হয়েছে ‘রেমাল’ অথবা ‘বালু’।
আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা মনে করি রেমাল একটি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে এবং খুলনা ও পটুয়াখালীর কেওড়াপাড়ার মধ্যবর্তী কোথাও, সুন্দরবনের সংলগ্ন এলাকায় আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি অপেক্ষাকৃত বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং সুন্দরবনের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে।’
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ঘনীভূত হয়ে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং এটি রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। উপকূলীয় এলাকা এবং দেশের অন্যান্য অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
’যখন ঝড়ের বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিমি মধ্যে থাকে, তখন একে ঘূর্ণিঝড় বলা হয়; গতিবেগ ৮৮ কিমি থেকে ১১৭ কিমি থাকলে তীব্র ঘূর্ণিঝড় বলা হয় এবং ১১৭ কিমি থেকে ২২০ কিমির মধ্যে থাকলে অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। বাতাসের গতিবেগ যখন ঘণ্টায় ২২০ কিমি ছাড়িয়ে যায়, তখন একে সুপার ঘূর্ণিঝড় বলা হয়।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রান্তের প্রভাব রবিবার সকাল থেকে অনুভূত হবে বলে জানিয়ে আজিজুর রহমান আরও বলেন, শনিবার রাত থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। রবিবার বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে এবং উপকূলীয় এলাকা ও দেশের অন্যত্র ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
সম্ভাব্য জলোচ্ছ্বাস সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে আজিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি রবিবার সন্ধ্যা ৬টায় ভাটার সময় দেশে আঘাত হানতে পারে। তাই জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা কম, তবে মধ্যরাত ১২টার পর ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
এদিকে, শুক্রবার বিকেল ৩টায় বিশেষ আবহাওয়া বুলেটিনে বিএমডি জানিয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের ওপর একটি নিম্নচাপ একই এলাকায় উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়েছে এবং এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
নিম্নচাপটি শুক্রবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ৮০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার বন্দর থেকে ৭৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা বন্দর থেকে ৭৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা বন্দর থেকে ৭৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিমি এর মধ্যে সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৪০ কিমি, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ায় ৫০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছাকাছি সমুদ্র মাঝারি অবস্থায় থাকবে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে দূরবর্তী সতর্কতা সংকেত নম্বর ১ দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং গভীর সমুদ্রের উপর দিয়ে চলাচলকারী সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থাকতে এবং সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। তাদেরকে গভীর সমুদ্রে না যাওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :