চ্যাটজিপিটি বর্তমান প্রযুক্তির সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্সের (এআই) এই চ্যাটবট মানুষের যে কোনো প্রশ্নের প্রায় নির্ভুল উত্তর দেয়। এ ছাড়া গল্প, গান, কবিতা, স্ক্রিপ্ট লেখার মতো সৃজনশীল কাজ কিংবা প্রোগামিং ও গবেষণার মতো জটিল কাজ অতি সহজেই চোখের পলকে প্রস্তুত করে ফেলে এই প্রযুক্তি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মার্কিন গবেষণা সংস্থা ওপেনএআই-এর তৈরি করা চ্যাটবটের নাম চ্যাটজিপিটি (চ্যাট জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইনড ট্রান্সফরমার)। জিপিটি ৩.৫-এর ওপর ভিত্তি করে বানানো এক ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল এটি, যা সব ধরনের অনুসন্ধানকে লিখিত আকারে সমাধান দিয়ে থাকে। ২০২২ সালের নভেম্বরে এই চ্যাটবট বাজারে আসার পর থেকে রীতিমতো ঘুম হারাম করে দেয় গুগলের।
চ্যাটজিপিটি ব্যবহারের জন্য প্রথমে এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। গুগলে চ্যাটজিপিটি লিখে সার্চ দিলে বা যে কোনো ব্রাউজার থেকে এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে (https://chat.openai.com) প্রবেশ করলে অ্যাকাউন্ট খোলার অপশন পাওয়া যায়। বিনা মূল্যে ওয়েবসাইটের হোমপেজের সাইনআপ অপশনে ক্লিক করে জিমেইল বা মাউক্রোসফট অ্যাকাউন্টে আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে প্রবেশ করা যায়। এরপর ওয়েবসাইটটি নাম এবং মোবাইল নম্বর কিংবা মাঝে মাঝে নাম এবং মোবাইল নম্বর চায়। নির্ভুল জন্মতারিখ কিংবা মোবাইল নম্বরে পাঠানো ওটিপি দেয়ার মাধ্যমে যে কারো আইডি সহজেই তৈরি হয়ে যায়।
আইডি তৈরির পর চ্যাটজিপিটির স্ক্রিনে নিউ চ্যাট অপশন দেখা যাবে। সেই অপশনে প্রবেশ করে যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে এই চ্যাটবটের কাছ থেকে। এ ধরনের চ্যাটবট বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায়ও দেখতে পাওয়া যায়। তবে চ্যাটজিপিটির প্রযুক্তির বাজারের যে কোনো চ্যাটবটের চেয়ে অনেক উন্নত। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কারো যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের কাছে পরীক্ষা পিছিয়ে দেয়ার বা ক্লাসে অনুপস্থিত হওয়ার জন্য অফিশিয়াল মেইল করতে হয়, তবে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষকের বিবরণসহ চ্যাটবটে দরখাস্ত লিখতে বললেই যে কোনো ভাষায় সেই কাজ সম্পন্ন করে দেবে এই চ্যাটবট।
এই চ্যাটবট দিয়ে সহজেই যে কোনো প্রশ্নের প্রায় নির্ভুল উত্তর পাওয়া যায়। এ ছাড়া যে কোনো গল্প, কবিতা, স্ক্রিপ্ট, গান ইত্যাদির মতো সৃজনশীল কাজ তৈরি করা চ্যাটবটটির এক মুহূর্তের ব্যাপার। চ্যাটজিপিটি গ্রোগ্রামিং করতে পারে এবং প্রোগ্রামিংয়ের ভুল শুধরে দিতে পারে। তা ছাড়া ভার্চুয়াল সহকারী এবং ভাষা অনুবাদ সিস্টেমে এটি অস্বাভাবিক ভালো কাজ করে। পাশাপাশি গবেষণার ক্ষেত্রেও সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে চ্যাটবটটি।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সাম আল্টমান, গ্রেগ ব্রোকম্যান, রেইড হোফম্যান, জেসিকা লিভিংস্টোন, পিটার থিফ, ইলন মাস্ক, অ্যামাজন ওয়েবসিরিজ এবং ইনফোসেস মিলে ওপেনএআই সংস্থা গঠনের ঘোষণা দেন। ধনকুবের মাস্ক প্রাথমিকভাবে এই সংস্থায় সবচেয়ে বেশি পরিমাণে বিনিয়োগ করলেও, ২০১৮ সালে সংস্থাটি থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। পরে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৯ তারিখে মাস্ক ওপেনএআই এবং এর বর্তমান সিইও স্যাম অল্টম্যানের বিরুদ্ধে নৈতিকতার প্রশ্ন তুলে মামলা করেন। মামলায় বলা হয়, ওপেনএআই তার মূল উদ্দেশ্য ও জনস্বার্থে কাজ না করে, শুধু আর্থিক লাভবান হওয়ার পথ খুঁজছে।
আপনার মতামত লিখুন :