মহাকাশে দ্বিতীয় স্পাই স্যাটেলাইট (গুপ্তচর উপগ্রহ) স্থাপনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে উত্তর কোরিয়ার। দেশটি সোমবার রাতে স্বীকার করেছে, প্রাথমিক উৎক্ষেপণ সফল হলেও মাঝ আকাশে গিয়ে স্যাটেলাইট বহনকারী রকেটটি বিস্ফোরিত হয়ে যায়। খবর আল জাজিরার।
উত্তর কোরিয়ার জাতীয় মহাকাশ প্রযুক্তি প্রশাসনের (এনএটিএ) ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল বলেছেন, নতুন স্যাটেলাইট ক্যারিয়ার রকেটের উৎক্ষেপণ ব্যর্থ হয়েছে, এটি প্রথম পর্যায়ের ফ্লাইটের সময় মধ্য-আকাশে বিস্ফোরিত হয়েছে।
স্যাটেলাইট বহনকারী রকেটটি বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে উত্তর কোরিয়া বলছে, প্রাথমিক যে কারণ, সেটি হচ্ছে রকেটটিতে একটি নতুন তরল জ্বালানির মোটর ছিল, যাতে লিক হতে পারে। অন্যান্য সম্ভাব্য কারণগুলোও তদন্ত করা হচ্ছে।
উত্তর কোরিয়া গত বছরের নভেম্বরে তৃতীয়বার প্রচেষ্টায় কক্ষপথে প্রথম গোয়েন্দা স্যাটেলাইট পাঠাতে সক্ষম হয়েছিল। এ নিয়ে প্রতিবেশি দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও তাদের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনার শিকার হন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। তবে তারপর থেকেই দ্বিতীয় গোয়েন্দা স্যাটেলাইট পাঠানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল উত্তর কোরিয়া।
দেশটি এরইমধ্যে রবিবার (২৬ মে) ঘোষণা দেয়, ২৭ মে থেকে ৪ জুনের মধ্যে মহাকাশে আরেকটি স্পাই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিবেশী দেশ জাপানকেও নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানায় পিয়ংইয়ং।
পিয়ংইয়ংয়ের পরিকল্পনা জেনে জাপান কর্তৃপক্ষ দক্ষিণ ওকিনাওয়ার উপকূলীয় এলাকায় একটি জরুরি সতর্কতা জারি করে, যাতে সেখানকার বাসিন্দা বা অন্যরা সাবধানে থাকে। তবে সোমবারই জাপান উপকূলীয় এলাকার সতর্কতা তুলে নেয় এবং জানায়, রকেটটির জাপানের ভূখণ্ডের উপর দিয়ে উড়ার আর কোনো আশা নেই। কারণ, উত্তর কোরিয়ার উৎক্ষেপণ ব্যর্থ হয়েছে।
জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, উত্তর কোরিয়ার ঘোষিত এলাকায় কোনো ক্ষেপণাস্ত্র উড়েনি এবং উত্তর কোরিয়া যেভাবে চেয়েছিল পরিস্থিতি সেভাবে নেই। এটি একটি উপগ্রহ ছিল কিনা, আমরা তা খতিয়ে দেখছি।
এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীও ‘অপরিচিত প্রজেক্টাইল’ উৎক্ষেপণের পর তা ব্যর্থ হয়েছে বলে জানায়। দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ বলেন, উত্তর কোরিয়া পীত সাগরের উপর দক্ষিণ দিকে একটি প্রজেক্টাইল নিক্ষেপ করেছে এবং এর কয়েক মিনিট পরে সমুদ্রে অনেক ধাতব টুকরো দেখা গেছে।
মূলত জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার দাবির পরপরই উত্তর কোরিয়া নিজেদের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে। উত্তর কোরিয়ার দাবি, এসব গুপ্তচর উপগ্রহ পিয়ংইয়ংয়ের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ক্ষমতা উন্নত করবে। বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো পরিকল্পিত সামরিক সংঘাতের আগাম তথ্য সরবরাহ করতে পারবেন কিম জং উন।
আপনার মতামত লিখুন :