১৯৬৭ সালে ‘আউটার স্পেস’ চুক্তির আওতায় মহাকাশে সামরিক কর্মকাণ্ড না চালাতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ একমত পোষণ করে। চাঁদ থেকে শুরু করে যেকোনো গ্রহ-উপগ্রহে সামরিক কর্মকাণ্ড বা গবেষণা পরিচালনার সুযোগ নেই। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা চীনের সামরিক কর্মকাণ্ড নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। নাসার প্রধান বিল নেলসন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের চীন সম্পর্কে সন্দেহের কথা জানিয়েছেন। চীন মহাকাশে নিজেদের কর্মকাণ্ড গোপনীয়তার সঙ্গে পরিচালনা করছে বলে জানান তিনি।
নাসার প্রধান সতর্ক করে বলেন, ‘চীন মহাকাশে সামরিক কর্মকাণ্ড আড়াল করতে বেসামরিক কর্মসূচি ব্যবহার করছে। মহাকাশে চীন তার সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে খুব গোপনীয়তার সঙ্গে। চীনের গোপনীয় কর্মকাণ্ডের জন্য ওয়াশিংটনকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। গত ১০ বছরে চীন মহাকাশে সামরিক ক্ষেত্রে অসাধারণ অগ্রগতি করেছে। এসব কাজ চীন বেশ গোপনীয়তার সঙ্গে করছে। আমরা বিশ্বাস করি, চীনের তথাকথিত বেসামরিক মহাকাশ কর্মসূচি আসলে একটি সামরিক কর্মসূচি। আমাদের সঙ্গে চীন প্রতিযোগিতায় নেমেছে। আমি আশা করছি, বেইজিং সজ্ঞানে মহাকাশ সামরিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করে বেসামরিক উপায়ে শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবহার করবে।’
বিল নেলসন ২০২৫ সালের নাসার বাজেট নিয়ে একটি সভায় এ বক্তব্য দেন। তিনি চীনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের আবার চাঁদে অবতরণের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বেইজিং যদি এবার প্রথমে চাঁদে পৌঁছাতে পারে, তাহলে নিজেদের অঞ্চল তৈরি করে অন্যদের বাইরে রাখতে পারে। চীন চাঁদের সম্পদ ও সমৃদ্ধ এলাকার মালিকানা দাবি শুরু করতে পারে।
২০২২ সালে চীন মহাকাশ কর্মসূচির মাধ্যমে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণকারী মহাকাশ স্টেশন স্থাপন করেছে। চন্দ্রজয়ের জন্য বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছে। চীন ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে মানুষ পাঠানোর জন্য কাজ করছে। মহাকাশ গবেষণার জন্য চীন অনেক অর্থ বিনিয়োগ করছে। চীনা মহাকাশ স্টেশনের নাম ‘তিয়ানগং’। এই মডুলার স্টেশন ভূপৃষ্ঠ থেকে ২১১-২৮০ মাইল উচ্চতায় পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। কক্ষপথে স্টেশনের গতি ঘণ্টায় প্রায় ১৭ হাজার ২০০ মাইল। স্টেশনটির তিনটি মডিউল রয়েছে। স্টেশনটিতে সাধারণত ছয় মাসের জন্য তিনজন মহাকাশচারী থাকতে পারেন।
আপনার মতামত লিখুন :