ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরপরি সাজিয়ে নিচ্ছেন তাঁর প্রশাসন। তারই ধারাবাহিকতায় ইলন মাস্ককে প্রশাসনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। মাস্ক এখন ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা বিবেক রামাস্বামীর সঙ্গে যৌথভাবে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত "ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি" (DOGE)-এর নেতৃত্ব দেবেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই ইলন মাস্ক তাঁর উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে নতুন গতি পেয়েছেন। মাস্কের নেতৃত্বে স্পেসএক্সের স্টারশিপ রকেট এখন বিশ্বব্যাপী ভ্রমণের ধারণায় বিপ্লব ঘটানোর পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি মাস্ক ঘোষণা করেছেন যে, স্পেসএক্সের অত্যাধুনিক প্রকল্প ‘আর্থ-টু-আর্থ স্পেস ট্রাভেল’ খুব শিগগিরই বাস্তবে রূপ নেবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কেবল প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নয়, বৈশ্বিক যোগাযোগব্যবস্থায়ও এক নতুন যুগের সূচনা করবে।
পৃথিবীর কক্ষপথে রকেট
প্রায় এক দশক আগে প্রস্তাবিত স্টারশিপ রকেট পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট হিসেবে বিবেচিত। এর অনন্য ক্ষমতা নজিরবিহীন গতিতে এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে ভ্রমণ সম্ভব করবে। স্টারশিপ গভীর মহাকাশে যাওয়ার পরিবর্তে পৃথিবীর কক্ষপথে সমান্তরালে চলবে, যা এক নগর থেকে অন্য নগরে অবিশ্বাস্য গতিতে যাত্রী পরিবহন করবে। এই রকেটের মাধ্যমে ভ্রমণের সময় যেমন উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে, তেমনি এটি বৈশ্বিক যোগাযোগব্যবস্থায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।
৩৯ মিনিটে নিউইয়র্ক থেকে সাংহাই
ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্টারশিপ প্রতিবার ১ হাজার যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। ভ্রমণের সময়ও অবিশ্বাস্যভাবে কম হবে। উদাহরণস্বরূপ, লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে টরন্টো যেতে সময় লাগবে মাত্র ২৪ মিনিট, লন্ডন থেকে নিউইয়র্ক ২৯ মিনিটে, দিল্লি থেকে সান ফ্রান্সিসকো ৩০ মিনিটে এবং নিউইয়র্ক থেকে সাংহাই যেতে সময় লাগবে ৩৯ মিনিট।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই প্রকল্পের একটি প্রচারমূলক ভিডিও শেয়ার করার পর এটি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) প্রকল্পটিকে শিগগিরই অনুমোদন দেবে। ইলন মাস্ক এই পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “এটি এখন সম্ভব।”
মাস্কের এই উদ্যোগ ব্যবসায়ী ও ভ্রমণপ্রেমীদের সময় বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে এ ধরনের ভ্রমণ খুবই ব্যয়বহুল হতে পারে। তবুও মানুষের আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে। মাস্কের এই ‘আল্ট্রা ফাস্ট ট্রাভেল’ উদ্যোগ বৈশ্বিক যোগাযোগব্যবস্থাকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করতে পারে। মাত্র কয়েক মিনিটে এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে ভ্রমণের এই সম্ভাবনা যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করবে।
আপনার মতামত লিখুন :