বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ২০২৫-এর ফাইনালের আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বড় ঘোষণা দিয়েছে। টুর্নামেন্টের প্রাইজমানি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবারের আসরে চ্যাম্পিয়ন দল পাবে আড়াই কোটি টাকা, যা আগের আসরে ছিল ২ কোটি টাকা। রানার্সআপ দলের জন্য প্রাইজমানি বাড়িয়ে দেড় কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বুধবার বিসিবির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এবার বিপিএলে দল ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে মোট ১০ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হবে। এর মধ্যে নতুন করে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান অধিকারী দলের জন্যও প্রাইজমানি ঘোষণা করা হয়েছে, যা আগের আসরে ছিল না।
বিসিবি জানায়, ২০২৫ বিপিএলে প্রাইজমানির পরিমাণ বাড়ানোর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে খেলোয়াড়দের আরও বেশি উদ্দীপিত করা এবং টুর্নামেন্টের প্রতিযোগিতা আরও বাড়ানো। নতুন কাঠামো অনুযায়ী—
- চ্যাম্পিয়ন দল পাবে: ২.৫ কোটি টাকা
- রানার্সআপ দল পাবে: ১.৫ কোটি টাকা
- তৃতীয় স্থান অধিকারী দল পাবে: ৬০ লাখ টাকা
- চতুর্থ স্থান অধিকারী দল পাবে: ৪০ লাখ টাকা
বিপিএলের ব্যক্তিগত ক্যাটাগরির পুরস্কারের ক্ষেত্রে আগের মতোই থাকছে প্রাইজমানি। তবে নতুন করে উদীয়মান ক্রিকেটার ক্যাটাগরিতে পুরস্কার যুক্ত করা হয়েছে।
- টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় পাবেন: ১০ লাখ টাকা
- ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় পাবেন: ৫ লাখ টাকা
- সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক পাবেন: ৫ লাখ টাকা
- সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক পাবেন: ৫ লাখ টাকা
- সেরা ফিল্ডার পাবেন: ৩ লাখ টাকা
- উদীয়মান ক্রিকেটার পাবেন: ৩ লাখ টাকা
বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, "বিপিএল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ। আমরা চাই, এই টুর্নামেন্টের মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতার মতো হোক। তাই প্রাইজমানি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের বিনিয়োগ বাড়ছে, দর্শক আগ্রহ বাড়ছে, স্পনসরশিপের সুযোগ বাড়ছে। আমরা চাই, খেলোয়াড়রাও আরও বড় অঙ্কের পুরস্কার পান।"
এবারের বিপিএলে এলিমিনেটর থেকে বাদ পড়েছে রংপুর রাইডার্স, আর দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার থেকে বাদ পড়েছে খুলনা টাইগার্স। ফলে খুলনা তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে এবং রংপুর হয়েছে চতুর্থ। সে অনুযায়ী—
- খুলনা টাইগার্স পাবে ৬০ লাখ টাকা
- রংপুর রাইডার্স পাবে ৪০ লাখ টাকা
বিপিএলের অন্যতম জনপ্রিয় দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মালিক নাফিসা কামাল বলেন, "প্রাইজমানি বাড়ানো ইতিবাচক একটি দিক। এতে বিপিএল আরও প্রতিযোগিতাপূর্ণ হবে। আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য এটি ভালো প্রেরণা।"
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় বলেন, "বিপিএলে খেলা মানেই বড় মঞ্চে নিজেদের প্রমাণের সুযোগ। এবার প্রাইজমানি বাড়ানোয় খেলোয়াড়রা আরও উজ্জীবিত হবে।"
বিসিবির এক কর্মকর্তা জানান, এবারের বিপিএলে স্পনসরশিপ থেকে মোট আয় হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। টিভি স্বত্ব বিক্রি এবং বিজ্ঞাপন থেকেও বিপিএল আয় করেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ।
বিসিবির অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, "বিপিএল দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানের একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ গড়ার জন্য আমরা কাজ করছি। খেলোয়াড়দের আরও বেশি সুযোগ-সুবিধা দিতে চাই।"
আগামীকাল বিপিএল ২০২৫-এর ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্সআপ দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা কেমন হয়, সেটি দেখার জন্য পুরো দেশ অপেক্ষা করছে। এবারের বিপিএল উত্তেজনা, গ্ল্যামার এবং অর্থের দিক দিয়ে আগের যে কোনো আসরকে ছাড়িয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :