বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ইতিহাসে অবিশ্বাস্য বোলিং নৈপুণ্য প্রদর্শন করে এক ম্যাচে ৭ উইকেট শিকার করেছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। নিজের অসাধারণ এই পারফরম্যান্স উৎসর্গ করেছেন ছয় বছর বয়সী ছেলে তাসফিন আহমেদ রিহানকে।
অসাধারণ বোলিংয়ের বিবরণ
২ জানুয়ারি, মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে দুর্বার রাজশাহীর হয়ে তাসকিন এই কীর্তি গড়েন।
পরিসংখ্যান:
★৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ৭ উইকেট।
উইকেট সংগ্রহের ধারা:
★প্রথম দুই ওভারে দুটি উইকেট।
★তৃতীয় ওভারে আরও দুটি উইকেট।
★শেষ ওভারে তিন উইকেট।
এই অসাধারণ বোলিংয়ের মাধ্যমে তাসকিন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তৃতীয় বোলার হিসেবে এক ম্যাচে ৭ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়েন। এর আগে এই কীর্তি করেন নেদারল্যান্ডসের কলিন অ্যাকারম্যান ও মালয়েশিয়ার সিয়াজরুল ইদ্রুস।
ছেলের জন্য উৎসর্গ
তাসকিন জানিয়েছেন, ছেলের অনুপ্রেরণা তাকে বরাবরই এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,
“আমি যখন ভালো করি, উইকেট পাই, আমার ছেলে আর বাবা খুব খুশি হন। তাদের সমর্থন আমার জন্য বড় অনুপ্রেরণা। যেদিন ভালো বোলিং করতে পারি না, তাসফিন খুব মন খারাপ করে। আজকের পারফরম্যান্স আমি ওর জন্য উৎসর্গ করছি।”
ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত
ঢাকার ইনিংস:
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান করে ঢাকা ক্যাপিটালস। লিটন দাস ও তানজিদ হাসান, তাসকিনের বলে দ্রুত আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান। এরপর স্টিফেন এস্কানজি ও শাহাদাত হোসেন দীপু মিলে ৭৯ রানের জুটি গড়েন। দীপু ৫০ রান করেন এবং তাসকিনের বলে আউট হন।
তাসকিনের শেষ দুই ওভার:
শেষ ওভারে চার বলে তিনটি উইকেট শিকার করেন তিনি।
রেকর্ড ও অর্জন
- বিপিএলের সেরা বোলিং ফিগার হিসেবে এর আগে মোহাম্মদ আমির ১৭ রানে ৬ উইকেট নিয়ে শীর্ষে ছিলেন।
- বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সাকিব আল হাসানের সেরা বোলিং (৬/৬) রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে যান তাসকিন।
- বিশ্ব রেকর্ডের কাছাকাছি গেলেও ৮ রানে ৭ উইকেট নিয়ে সিয়াজরুল ইদ্রুসের বিশ্ব রেকর্ড অল্পের জন্য ভাঙতে পারেননি তাসকিন।
দুর্বার রাজশাহীর জয়
তাসকিনের এই অসাধারণ বোলিং এবং পরে এনামুল হক ও রায়ান বার্লের ব্যাটিংয়ে দুর্বার রাজশাহী ৭ উইকেটের অনায়াস জয় পায়। অনুমিতভাবেই ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতে নেন তাসকিন আহমেদ।
শেষ কথা
তাসকিনের এমন অনন্য পারফরম্যান্স শুধু বিপিএল নয়, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেও স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ছেলের প্রতি ভালোবাসা এবং অনুপ্রেরণা যে তার পারফরম্যান্সে কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে, সেটিই এই ম্যাচের সবচেয়ে মানবিক দিক।
আপনার মতামত লিখুন :