গত ১৫ মাসে ৫ হাজারেরও বেশি কর্মী নিয়োগ করার পরও বাংলাদেশ রেলওয়ে চলছে প্রয়োজনীয় জনবলের অর্ধেক নিয়ে। ফলে, যাত্রীদের মানসম্পন্ন সেবা দিতে পারছে না সংস্থাটি।
রেলওয়ের তথ্য অনুসারে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রেল পরিবহন সংস্থাটিতে মোট ৪৭ হাজার ৬৩৭টি অনুমোদিত পদের মধ্যে বর্তমানে ২৪ হাজার ৪০৩ জন কাজ করছেন এবং খালি রয়েছে ২৩ হাজার ২৩৪টি পদ।
রেল কর্মকর্তারা জানান, শূন্য পদের মধ্যে ২০ হাজার ৬৬৬টি তৃতীয় ও চতুর্থ গ্রেডের কর্মচারীদের।
নিয়োগ নীতির অভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হওয়ার প্রায় পাঁচ বছর পর বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০২২ সালে তৃতীয় ও চতুর্থ গ্রেডের নন-গেজেটেড কর্মী নিয়োগ দেওয়া শুরু করে। ২০২০ সালের নভেম্বরে রেলওয়ের জন্য নতুন নিয়োগ বিধি অনুমোদিত হওয়ার পর এই নিয়োগ শুরু হয়।
ইতোমধ্যে অনেক কর্মচারী অবসরে যাওয়ার কারণে নতুন নিয়োগ অনুমোদিত কর্মী সংখ্যার মাত্র অর্ধেক নিয়ে কাজ করছে রেলওয়ে।
রেল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রেলওয়ের সেবা সম্প্রসারণের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি নতুন ট্রেন চালু করার পরে জনবল সংকট আরও প্রকট হয়েছে।
গত বছর চালু হওয়া চারটি নতুন রুটে আরও ট্রেন পরিচালনা শুরু করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে মনে করছেন রেল কর্মকর্তারা।
বর্তমানে চলমান সংকটের কারণে সারাদেশে ৫০৭টি রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে ১০০টিরও বেশি বন্ধ রয়েছে বলে জানান তারা।
২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে সহকারী স্টেশন মাস্টার, গার্ড, পয়েন্টসম্যান, কারিগরি সহকারী (খালাসি), সহকারী লোকোমাস্টার এবং ওয়েম্যান হিসেবে মোট ৫ হাজার ৩৪২ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অধিকন্তু, পয়েন্টসম্যান ও বুকিং সহকারীসহ আরও কয়েকটি পদের জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে।
শনিবার রাজধানীর রেল ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বাংলাদেশ রেলওয়েতে জনবল সংকটের কথা স্বীকার করেন।
তিনি জানান, দেশের সবচেয়ে বড় লোকোমোটিভ এবং ক্যারেজ মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কারখানা সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপ ধারণক্ষমতার অর্ধেকেরও কম জনবল নিয়ে চলছে।
সম্প্রতি তিনি সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপ পরিদর্শন করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, `বর্তমানে সেখানে ২ হাজার ৮০০ জন অনুমোদিত জনবলের বিপরীতে মাত্র ৮৫০ জন কর্মী কাজ করছেন। এর ফলে তাদের সক্ষমতায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েছে।`
মন্ত্রী অবশ্য বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী রেলওয়ে আরও কর্মী নিয়োগ করছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবির বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের `গুরুতর অভাব`র কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, এই সহযোগিতার অভাব মানসম্পন্ন সেবা প্রদানের প্রচেষ্টায় বাধা তৈরি করছে।
`তবে, আমরা বসে নেই। আমরা সমস্যা সমাধানে অক্লান্ত পরিশ্রম করছি,` যোগ করেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :