বাংলাদেশ রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১

ইফতারে কী খাবেন: স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবারের দিকনির্দেশনা

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২৫, ১১:৫১ এএম

ইফতারে কী খাবেন: স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবারের দিকনির্দেশনা

পবিত্র রমজান মাসে সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতার হলো শক্তি পুনরুদ্ধারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু সঠিক খাদ্যাভ্যাস না মানলে শরীরে পানিশূন্যতা, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ও অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির মতো নানা অসুবিধা দেখা দিতে পারে। পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দিচ্ছেন, ইফতারে অতিরিক্ত ভাজাপোড়া বা তেলচর্বিযুক্ত খাবার না খেয়ে পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য খাবার গ্রহণ করা উচিত।

ইফতারের জন্য সঠিক খাবার নির্বাচন

রোজা ভাঙার সময় প্রথমেই পর্যাপ্ত পানি বা শরবত পান করা জরুরি। শরীর দীর্ঘক্ষণ পানিশূন্য থাকার ফলে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করলে তা সহজে হজম ও শোষিত হয়। শরবতের মধ্যে ঘরে তৈরি লেবু পানি, বেল বা ইসুবগুলের শরবত উপকারী। তবে বাজারের অতিরিক্ত চিনিযুক্ত কৃত্রিম জুস ও কোমল পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত।

পুষ্টিবিদরা ইফতারে প্রথমেই সহজপাচ্য শর্করা গ্রহণের পরামর্শ দেন। যেমন—

  •  খেজুর: এটি প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি ও পুষ্টিকর।

  •  দই-চিড়া: এটি দ্রুত শক্তি যোগায় ও হজমশক্তি বাড়ায়।

  •  ওটমিল বা চিয়া পুডিং: স্বাস্থ্যকর ও সহজে হজমযোগ্য খাবার।

  • কলা ও বাদাম: শরীরে প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান সরবরাহ করে।

ভাজাপোড়া কমিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন

সাধারণত ইফতারে পিঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, ছোলা ভুনা ইত্যাদি ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া হয়। তবে এসব অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার পাকস্থলীর উপর চাপ ফেলে ও অস্বস্তিকর অনুভূতি তৈরি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার খেলে বুকজ্বালা, গ্যাসের সমস্যা এবং দীর্ঘমেয়াদে উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই বিকল্প হিসেবে সেদ্ধ ছোলা, মুড়ি, শসা, টমেটো, বিভিন্ন শাকসবজি, ডিম সেদ্ধ ও বেকড স্ন্যাকস খাওয়া যেতে পারে।

ইফতারের পরের খাবারে কী খাবেন?

ইফতার শেষে মাগরিবের নামাজের পর বা এক-দুই ঘণ্টা পর হালকা কিন্তু পুষ্টিকর খাবার খাওয়া ভালো। যেমন—

  •  হালিম: এটি প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের ভালো উৎস।

  •  সবজি ও চিকেন স্যুপ: হালকা ও সহজপাচ্য খাবার যা প্রোটিন ও ভিটামিন সরবরাহ করে।

  •  সেদ্ধ ডিম বা গ্রিলড চিকেন: এটি শক্তি জোগায় ও পেশির গঠনে সহায়ক।

  •  ফলের সালাদ: এটি শরীরে পানিশূন্যতা দূর করে এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন সরবরাহ করে।

অনেকের রোজায় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়। এটি প্রতিরোধের জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তোকমা, ইসবগুল, বিভিন্ন ফলের রস এবং শাকসবজি খেলে এ সমস্যা কমতে পারে।

সারা দিন রোজা রাখার পর অতিরিক্ত খাবার খাওয়া অনেকের অভ্যাস। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ধীরে ধীরে খাবার গ্রহণ করা উচিত এবং অতিরিক্ত তেলচর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করা ভালো। স্বাস্থ্যকর ও ভারসাম্যপূর্ণ খাবার খেলে শরীর সুস্থ থাকবে এবং পরবর্তী দিনের রোজার জন্য নিজেকে ভালোভাবে প্রস্তুত করা যাবে।

 সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিন, রমজান হোক আনন্দময় ও পুষ্টিকর!

Link copied!

সর্বশেষ :