শবে বরাত বা লাইলাতুল বরাত হল শাবান মাসের ১৪ তারিখের রাত, যা মুসলিম উম্মাহর কাছে ক্ষমা, রহমত ও বরকতের রাত হিসেবে পরিচিত। এই রাতে আল্লাহ অসংখ্য বান্দাকে ক্ষমা করেন এবং ভাগ্য নির্ধারণ করেন বলে বিশ্বাস করা হয়।
শবে বরাতের গুরুত্ব ও ফজিলত
বিখ্যাত সাহাবি মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন,
"শাবানের অর্ধরাত্রিতে (১৪ তারিখ দিবাগত রাত) আল্লাহ তার সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সবাইকে ক্ষমা করে দেন।" (ইবনে হিব্বান, হাদিস: ৫৬৬৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি শাবান মাসে একদিন রোজা রাখবে, তাকে আমার সুপারিশ লাভ হবে।"
শবে বরাতের নামাজ ও ইবাদত
নফল নামাজ
শবে বরাতের রাতের নামাজ নফল, তাই অন্য নফল নামাজের মতোই পড়তে হবে। নির্দিষ্ট রাকাতের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, তবে যা সম্ভব হয় তা পড়া উত্তম।
- মাগরিবের পর ছয় রাকাত নফল নামাজ পড়া ভালো, যা হায়াত, ঈমান ও দুনিয়ার বিপদমুক্তির জন্য পড়া হয়।
- সারারাত দুই রাকাত করে নামাজ আদায় করা যায়।
- অতীতে কাজা হয়ে যাওয়া নামাজগুলোর কাযা আদায় করার সুযোগ রয়েছে।
সালাতুল তাসবীহ
এ রাতে সালাতুল তাসবীহ পড়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। এটি রাসুল (সা.) উত্তম ইবাদত হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
শবে বরাতের নামাজের নিয়ত
আরবি নিয়ত
"নাওয়াইতু আন উছল্লিয়া লিল্লা-হি তাআ-লা- রাকআতাই ছালা-তি লাইলাতিল বারা-তিন্ -নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল্ কাবাতিশ্ শারীফাতি, আল্লাহু আকবার।"
বাংলায় নিয়ত
"শবে বরাতের দুই রাকাত নফল নামাজ কিবলামুখী হয়ে পড়ছি, আল্লাহু আকবার।"
বিশেষ দোয়া
রাসুল (সা.) শবে বরাত ও রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে একটি বিশেষ দোয়া বেশি বেশি পড়ার তাগিদ দিয়েছেন:
"আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।"
বাংলা অর্থ
"হে আল্লাহ, আমাদের রজব ও শাবান মাসে বরকত দিন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন।" (বায়হাকি: ৩৫৩৪; নাসায়ি: ৬৫৯; মুসনাদে আহমদ: ২৩৪৬)
শবে বরাতে করণীয় ইবাদত
- নফল নামাজ আদায় করা
- তওবা ও ইস্তেগফার করা
- কুরআন তিলাওয়াত করা
- রোজা রাখার নিয়ত করা (পরদিন ১৫ শাবান নফল রোজা রাখা মুস্তাহাব)
- দান-সদকা করা
আপনার মতামত লিখুন :