কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা হিন্দু ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পূজা। যা মা লক্ষ্মীর আরাধনার মাধ্যমে ধন-সম্পদ ও সমৃদ্ধি লাভের উদ্দেশ্যে ঘরে ঘরে পালন করা হয়। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই এই পূজায় অংশ নিয়ে থাকেন। অনেকেই সারা বছর প্রতি বৃহস্পতিবার মা লক্ষ্মীর পূজা করেন, বিশেষ করে আশীর্বাদ লাভের জন্য। এবারের কোজাগরী লক্ষ্মীপূজাতে রয়েছে রবি যোগ, যা এই বছরের পূজার সময়কালকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে। আসুন পূর্ণিমার তিথি, রবি যোগ এবং এই পূজার অন্যান্য শুভ সময় সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।
পূর্ণিমার তিথি
২০২৪ সালে কোজাগরী পূর্ণিমার সময় নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি ছিলো। তবে জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে ১৬ অক্টোবর রাত থেকেই পূর্ণিমা তিথি শুরু হচ্ছে। গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকার মতে, পূর্ণিমা তিথি শুরু হবে ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭:৪২:৩৭ মিনিটে এবং শেষ হবে ১৭ অক্টোবর বিকেল ৫:১৭:৩৬ মিনিটে। অপরদিকে বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকার মতে, পূর্ণিমা শুরু হবে ১৬ অক্টোবর রাত ৮:৪১ মিনিটে এবং শেষ হবে ১৭ অক্টোবর বিকেল ৪:৫৬ মিনিটে।
রবি যোগের মাহাত্ম্য
কোজাগরী পূর্ণিমার দিন একটি বিশেষ শুভ রবি যোগ তৈরি হচ্ছে। বৈদিক জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী এই রবি যোগ শুরু হবে ১৬ অক্টোবর ভোর ৬:২৩ মিনিটে এবং চলবে রাত ৭:১৮ মিনিট পর্যন্ত। রবি যোগ পূজা ও আধ্যাত্মিক কাজের জন্য অত্যন্ত শুভ সময় বলে বিবেচিত হয় এবং এই সময়ে মা লক্ষ্মীর পূজা করলে বিশেষ আশীর্বাদ লাভ হয়।
পায়েসের মাহাত্ম্য
শারদ পূর্ণিমার চাঁদ এর আলোয় পায়েস রাখা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। বলা হয় এই পায়েস খেলে জীবনের বহু কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং সুখ-সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়। তবে চাঁদের আলোয় পায়েস রাখার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে কোনো পোকামাকড় তাতে না পড়ে।
লক্ষ্মীপূজার অন্যান্য সময়
লক্ষ্মী শুধুমাত্র কোজাগরী পূর্ণিমার দিনেই পূজিত হন না। শস্য সম্পদের দেবী হিসেবে তাঁকে ভাদ্র সংক্রান্তি, পৌষ সংক্রান্তি এবং চৈত্র সংক্রান্তিতেও পূজা করা হয়। তাছাড়া আশ্বিন পূর্ণিমা এবং দীপাবলীতেও লক্ষ্মীর পূজা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালন করা হয়। এই পূজার মাধ্যমে ঘরে ধন-সম্পদ ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধি হয় বলে বিশ্বাস করা হয়।
২০২৪ সালের কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোতে পূর্ণিমার সময় এবং রবি যোগের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। পূজা ও আধ্যাত্মিক কাজের জন্য এটি অত্যন্ত শুভ সময় হিসেবে বিবেচিত। কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে লক্ষ্মী দেবীর পূজা করা হয় ধন-সম্পদ ও শস্যের আশায়, যা সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনায় অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার মতামত লিখুন :