বাংলাদেশ সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১

মৃত্যুশয্যায় সাহাবি আবু দারদা (রা.)-এর উপদেশ

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫, ১১:২২ এএম

মৃত্যুশয্যায় সাহাবি আবু দারদা (রা.)-এর উপদেশ

প্রতীকী ছবি

হজরত আবু দারদা (রা.) মৃত্যুর সময়ে গভীর খোদাভীতি ও ব্যাকুলতার সঙ্গে কেঁদে উঠতেন। তাঁর স্ত্রী উম্মু দারদা এই কান্নার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলতেন, “কেন কাঁদবো না? কিভাবে মুক্তি পাবো আল্লাহ ভালো জানেন।” মৃত্যুর ভয়াবহতা অনুভব করে তিনি জীবনের শেষ সময়ে আত্মবিশ্লেষণ ও খোদার প্রতি তীব্র আত্মসমর্পণ করতেন।

একদিন তিনি তাঁর ছেলে বিলালকে ডেকে বললেন, “দেখো, একদিন তোমাকেও এই অবস্থার সম্মুখীন হতে হবে। সেই দিনের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করো।”

মৃত্যুর মুহূর্ত যতই ঘনিয়ে আসছিল, হজরত আবু দারদা (রা.) আরও বেশি অস্থির হয়ে উঠছিলেন। স্ত্রী তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিলেন যে, তিনি তো সবসময় মৃত্যুকে ভালোবাসতেন। উত্তরে তিনি বলেন, “তোমার কথা সত্য, তবে এখন যখন মৃত্যু আসন্ন জেনেছি, তখন এই অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।” এরপর তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, “আমার শেষ সময়ে আমাকে কালিমার তালকিন দাও।” লোকেরা কালিমা পাঠ করলে তিনি তা উচ্চারণ করতে করতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

অন্তিম রোগ শয্যায় থাকার সময় ইউসুফ ইবনে আবদিল্লাহ ইবনে সালাম তাঁকে দেখতে আসেন। ইউসুফ বলেন, “আপনার সঙ্গে আমার আব্বার গভীর সম্পর্ক ছিল। সেই সূত্রে আপনার সাক্ষাৎ করতে এসেছি।” উত্তরে হজরত আবু দারদা (রা.) বলেন, “মিথ্যা অতি নিকৃষ্ট জিনিস। তবে যদি কেউ মিথ্যা বলে ইস্তিগফার করে, আল্লাহ তাকে মাফ করেন।” (মুসনাদ/৬৪৫০)

মৃত্যুর আগে হজরত আবু দারদা (রা.) ইউসুফকে ডেকে বলেন, “আমার মৃত্যু আসন্ন। একথা সবাইকে জানিয়ে দাও।” খবর ছড়িয়ে যেতেই অসংখ্য মানুষ তাঁর ঘরের আশপাশে জড়ো হতে শুরু করে। যখন তাঁকে জানানো হলো যে, ঘরের ভেতরে-বাইরে জনতার ঢল নেমেছে, তখন তিনি বলেন, “আমাকে বাইরে নিয়ে চলো।”

বাইরে এনে তিনি উঠে বসলেন এবং জনগণের উদ্দেশ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস বর্ণনা করলেন। তাঁর জীবনের শেষ বাণীও ছিল আল্লাহ ও রাসূলের পথে চলার আহ্বান। তাঁর এই জীবনব্যাপী শিক্ষা ও মৃত্যুপরবর্তী উপদেশ সকলের হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলেছিল।

Link copied!

সর্বশেষ :