বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর ইউনূস সরকারের প্রতি কড়া বার্তা একটি সতর্কবার্তার প্রতিধ্বনি। আজকের দিনটি জাতীয় রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ইউনূস সরকারকে উদ্দেশ্য করে এক কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে আইনশৃঙ্খলা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, এবং সিন্ডিকেট ভাঙার মতো জরুরি বিষয়।
“আমরা দোহাই শুনতে চাই না, আমরা কাজ চাই”
হাসনাত আব্দুল্লাহ স্পষ্ট ভাষায় বলেন, "অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি মনে করে সিন্ডিকেটের হাত পরিবর্তন হয়েছে এবং সবকিছু ঠিকঠাক চলছে, তবে তারা ভুল ধারণা পোষণ করছে। আমরা দোহাই শোনার জন্য আপনাদের এখানে রাখিনি, বরং জনগণের স্বার্থে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এনেছি।"
তিনি আরও যোগ করেন, "যে কেউ চাঁদাবাজি করবে, তার হাত ভেঙে দিতে হবে। এক্সকিউজ দিয়ে আর পরিস্থিতি এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।" এই বক্তব্য দেশবাসীর মনে এক নতুন আশার আলো জ্বালিয়ে দিয়েছে, যেখানে গণতান্ত্রিক এবং সুশাসনের দাবিতে জনগণকে একসঙ্গে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
সিন্ডিকেট ভাঙার দাবি এবং সরকারের দায়িত্ব
৫ আগস্টের পর থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেন স্বাভাবিক হয়নি, সে প্রশ্ন তোলেন হাসনাত। তাঁর মতে, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য এবং দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি সরকারের ব্যর্থতাকে প্রতিফলিত করছে। "আপনার কাজ সিন্ডিকেট ভাঙা, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া। ব্যর্থতার দায় সরকারকেই নিতে হবে," এমনই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি।
সচিবালয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর অনেকেই আন্দোলনের শক্তি মেনে নিতে পারেনি বলে অভিযোগ করেন হাসনাত। তিনি সচিবালয়ের ষড়যন্ত্রের বিষয়টি উত্থাপন করে বলেন, "যারা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন, তাদের বলছি—সময় এসেছে বাস্তবতাকে মেনে নেওয়ার। খুনি হাসিনার পুনর্বাসন আর এ দেশে হবে না।"
ঐক্যের ডাক
হাসনাত আরও বলেন, "৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে আমাদের একমাত্র শত্রু হলো আওয়ামী লীগ। সব ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিকে একত্রিত হতে হবে।" তিনি গত ১৬ বছরের সরকারের অত্যাচারের কথা উল্লেখ করে বলেন, "এই সরকার প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে নিপীড়িত করেছে এবং বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। আমাদের নেতৃত্বে সারা দেশের মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে, যা হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।"
সমাবেশের বার্তা: নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন
এই সমাবেশের মূল বার্তা ছিল একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন। যেখানে ফ্যাসিবাদ, দুর্নীতি, এবং বৈষম্যের কোনো স্থান থাকবে না। "আমরা স্বাধীনতার প্রকৃত মানে বুঝতে চাই," বলছেন আন্দোলনের নেতা।
হাসনাতের বক্তব্য স্পষ্টতই একটি নতুন বার্তা বহন করে। এটি কেবল সমালোচনা নয়, বরং একটি নতুন আন্দোলনের শুরু। জনগণ তাঁর সঙ্গে একত্রিত হলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :