বাংলাদেশ রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১

কক্সবাজারে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে পরিমল কান্তি শীলের বক্তব্য নিয়ে তোলপাড়

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৫, ০৩:১৫ পিএম

কক্সবাজারে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে পরিমল কান্তি শীলের বক্তব্য নিয়ে তোলপাড়

কক্সবাজারে জামায়াতে ইসলামের কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় ।

কক্সবাজারে জামায়াতে ইসলামের কর্মী সম্মেলনে হিন্দু নেতা পরিমল কান্তি শীলের দেওয়া বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। তার মন্তব্য নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, যা কক্সবাজারের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।

কক্সবাজারের একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত জামায়াতে ইসলামের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিমল কান্তি শীল। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, "বাংলাদেশ একটি বহুমাত্রিক সমাজব্যবস্থা অনুসরণ করে, যেখানে সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মধ্যে রয়েছে। আমাদের উচিত পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নেওয়া।"

তার এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই দাবি করেছেন, জামায়াতের একটি সম্মেলনে তার উপস্থিতি ও বক্তব্য প্রশ্নবিদ্ধ। কেউ কেউ একে রাজনৈতিক সুবিধাবাদ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনা স্থানীয় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, তার এই বক্তব্য কি কক্সবাজারের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ওপর প্রভাব ফেলবে? অন্যদিকে, তার সমর্থকরা বলছেন, তিনি তার নিজস্ব মতামত প্রকাশ করেছেন, যা গণতান্ত্রিক অধিকার।

বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের এক নেতা বলেন, "আমরা উদ্বিগ্ন যে, একজন হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা কীভাবে একটি ইসলামী রাজনৈতিক সংগঠনের সম্মেলনে বক্তব্য দিতে পারেন। এটি আমাদের সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার জন্য শঙ্কার বিষয়।"

অন্যদিকে, জামায়াতের এক মুখপাত্র বলেছেন, “পরিমল কান্তি শীল আমাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন এবং তার বক্তব্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আহ্বান জানিয়েছেন, যা প্রশংসনীয়।”

এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। ফেসবুক ও টুইটারে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও সাধারণ জনগণ এ বিষয়ে মতামত দিচ্ছেন। কেউ কেউ পরিমল কান্তি শীলের বক্তব্যকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ একে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন।

এই বিতর্কের ফলে কক্সবাজারের রাজনৈতিক পরিবেশ আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি এবং যদি কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে এই ধরনের সংবেদনশীল ইস্যুগুলোর ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। বিশেষ করে, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল হতে হবে।

অন্যদিকে, সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা, রাজনৈতিক মতাদর্শগত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা হবে। পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া হবে, তা সময়ই বলে দেবে।

Link copied!

সর্বশেষ :