বাংলাদেশ রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২

খালেদা জিয়ার বক্তব্য অনুকরণে বিতর্ক: কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫, ০১:২০ পিএম

খালেদা জিয়ার বক্তব্য অনুকরণে বিতর্ক: কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি

কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. সোলাইমানের পদত্যাগ দাবি করে ছাত্রদল নেতাদের সংবাদ সন্মেলন। আজ দুপুরে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে

কক্সবাজার সরকারি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’ পর্বে এক ছাত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অনুকরণ করেন। ২৩ জানুয়ারি কলেজ ক্যাম্পাসে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় ছাত্রীটির উপস্থাপনাকে ব্যঙ্গাত্মক ও মানহানিকর দাবি করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রদল। তারা কলেজের অধ্যক্ষ মো. সোলাইমানের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে।

ছাত্রদলের প্রতিবাদ ও সংবাদ সম্মেলন

আজ বুধবার কক্সবাজার প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ মো. সোলাইমানের পদত্যাগ দাবি করেন ছাত্রদলের বর্তমান ও সাবেক কমিটির অন্তত ১১ জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুজিবুল হক। এ সময় বক্তব্য দেন কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হক ও বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক রুবেল মিয়া

ছাত্রদলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়,
"কলেজের এক ছাত্রী বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে ব্যঙ্গাত্মক উপস্থাপনা করেছেন। এর সঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ মো. সোলাইমান, বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা কমিটির আহ্বায়ক আজিজুল মোস্তফা, সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন ফারুকীসহ ছয় শিক্ষক জড়িত ছিলেন।"

ছাত্রদলের লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়,
"এই ব্যঙ্গাত্মক প্রদর্শনীটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এরপরও কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই ছাত্রীকে পুরস্কৃত করে, যা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা অধ্যক্ষের পদত্যাগসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যদের প্রশাসনিক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।"

অধ্যক্ষের ব্যাখ্যা

অভিযোগের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মো. সোলাইমান বলেন,
"আমাদের অজান্তে ওই ছাত্রী ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’ ইভেন্টে খালেদা জিয়াকে নিয়ে পরিবেশনা করেন, যা আমরা সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ করে দিই।"

তিনি আরও বলেন,
"ছাত্রীটি মূলত বেগম খালেদা জিয়ার চরিত্রে অভিনয়ের চেষ্টা করেছিলেন। তবে তাঁর বাচনভঙ্গির অপরিপক্বতার কারণে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। ক্রীড়া কমিটিসহ বিচারকেরা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে ওই ছাত্রীকে অযোগ্য ঘোষণা করেন এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করে। পরে ছাত্রদলসহ অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের নেতাদের সামনে ছাত্রীটি নিজের ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করেন এবং বিষয়টি সেখানেই মীমাংসা হয়। এরপরও অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি অযৌক্তিক।"

প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ

রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে কলেজ

  • একটি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় রাজনৈতিক নেতার অনুকরণ করা কতটা শালীন বা গ্রহণযোগ্য, সে বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে।
  • কলেজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গেই নিয়ন্ত্রণ করেছে, তবুও ছাত্রদল বিষয়টিকে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়েছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ?

  • ছাত্রদল দাবি করছে, এটি পরিকল্পিত একটি কর্মকাণ্ড ছিল এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ তাতে ইন্ধন দিয়েছে।
  • অন্যদিকে, কলেজ বলছে, এটি ছিল একজন ছাত্রীর ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স, যা অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের কারণে বিতর্কিত হয়েছে।

সমাধানের পথ

  • যদি ঘটনাটি ইচ্ছাকৃত হয়, তাহলে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।
  • তবে যদি এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল হয়, তাহলে রাজনৈতিক বিতর্ক এড়িয়ে শিক্ষার পরিবেশ ঠিক রাখা উচিত।
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত রাজনৈতিক পক্ষপাত থেকে দূরে থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত সংস্কৃতি ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা।
Link copied!

সর্বশেষ :