দেশের সর্বশেষ জনশুমারি অনুসারে ঢাকায় বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা ২ কোটি ৭০ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ নিজস্ব আবাসনের বাইরে বসবাস করছেন। এদের নেই নিজস্ব কোনো ঘরবাড়ি। প্রতি বছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার পালিত হয় বিশ্ব বসতি দিবস। আর এই দিনেই সামনে আসে আবাসন কিংবা বসতি সংকটের সমস্যা। এ বছর বিশ্ব বসতি দিবসের প্রতিপাদ্য, `তরুণদের সম্পৃক্ত করি, উন্নত নগর গড়ি`।
আবাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন, নদীভাঙনসহ নানাবিধ কারণে ঢাকার জনসংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব বাস্তুহারা মানুষ রাজধানীতে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাচ্ছেন না। ফলে তারা বস্তি, ফুটপাত, বাস, লঞ্চ, কিংবা ট্রেন স্টেশনগুলোতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন। সরকারি পরিসংখ্যানে ঢাকার জনসংখ্যা ২ কোটি ১০ লাখ বলা হলেও বাস্তবে এ সংখ্যা আরও বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রতিবছরই ভিন্ন প্রতিপাদ্যে বিশ্ব বসতি দিবস পালিত হয়ে আসছে। ১৯৮৬ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ব বসতি দিবস পালন শুরু হয়। এবছর বাংলাদেশের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বিশ্ব বসতি দিবস উপলক্ষে রাজউক মিলনায়তনে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সেখানে প্রধান বক্তা হিসেবে থাকবেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর গোয়েন লুইস।
নগর গবেষণা কেন্দ্রের এক গবেষক জানান, ঢাকায় প্রায় ৪০ লাখ মানুষ বস্তিতে বাস করেন। যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ। অধিকাংশ নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের পক্ষে রাজধানীতে নিজস্ব বাসস্থান তৈরি করা প্রায় অসম্ভব। এদের বেশিরভাগের আয়-রোজগারের ৪০-৫০ শতাংশই চলে যাচ্ছে ভাড়াবাড়ির খরচ মেটাতে। ফলে তারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে নিজস্ব আবাসনের বাইরেই থাকছেন।
ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ২০২২ সালের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী ঢাকার বাসিন্দাদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ নিজস্ব বসতিহীন। বিশেষত নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের পক্ষে ঢাকায় বাসস্থান তৈরি করা দিন দিন আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। সরকারের যথাযথ আবাসন নীতির ঘাটতির কারণে এ সমস্যার সমাধান এখনও অনিশ্চিত।
আপনার মতামত লিখুন :