গত সপ্তাহে বাংলাদেশে বিক্ষোভ দমনের ঘটনায় ‘ভয়াবহ সহিংসতার’ অভিযোগ তুলে জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান ঘটনার তাৎক্ষণিক এবং স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে সরকারের সাথে সম্পৃক্ত বলে কথিত গোষ্ঠীর হাতে অনেক মানুষ হামলার শিকার হয়েছেন এবং তাদের সুরক্ষার জন্য কোনো পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের উচিত নিহত, আহত এবং আটক ব্যক্তিদের পরিবারের কাছে তাদের বিষয়ে সমস্ত তথ্য প্রদান করা।’
পুলিশ ও হাসপাতালের সূত্র উল্লেখ করে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গত সপ্তাহের সহিংসতায় বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত ১৯৩ জন নিহত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে এটি ছিল সবচেয়ে বড় অশান্তির ঘটনা।
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে নিহত এবং ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন শহরে এখনও হাজার হাজার সেনা টহল দিচ্ছে এবং দেশব্যাপী ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট মূলত বহাল রয়েছে। তবে বিক্ষোভের নেতারা নতুন করে বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে সংঘর্ষ কমেছে।
তুর্কের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘কমপক্ষে দুই সাংবাদিক নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। বিরোধী দলের নেতাকর্মীসহ শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও, ঘটনায় আহত হওয়া ১,০০০ জনেরও বেশি মানুষের মধ্যে অনেকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এবং অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন।’
ভলকার তুর্ক সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন সাংবাদিকসহ সকলের জন্য পূর্ণাঙ্গ ইন্টারনেট সুবিধা পুনরুদ্ধার করা হয় যাতে তারা অবাধে যোগাযোগ করতে পারেন। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে ইচ্ছাকৃতভাবে সম্পূর্ণ ইন্টারনেট বন্ধ রাখার মতো পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন পরিপন্থী। এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার ঝুঁকির মুখে ফেলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইন্টারনেট বন্ধ রাখা সংগঠন ও চলাফেরার স্বাধীনতা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার অধিকার এবং অর্থনৈতিক অধিকারসহ অন্যান্য অধিকার লঙ্ঘন করে। ইন্টারনেট বন্ধের ফলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কার্যকলাপের ওপর জনসাধারণের নজরদারি ও তথ্য জ্ঞান কমে যায়, যার ফলে তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য শাস্তি এড়ানোর আশঙ্কা বেড়ে যায়।’
আপনার মতামত লিখুন :