আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি, বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে ভালোবাসা দিবস। দিনটি ভালোবাসা ও প্রিয়জনের প্রতি অনুভূতি প্রকাশের জন্য বিশেষভাবে উদযাপিত হয়। তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষ ভালোবাসার মিষ্টি অনুভূতি ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন।
বিশেষ এই দিনে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হচ্ছে। সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেছে ফুলের দোকান, চকলেটের দোকান, এবং উপহারের স্টলে ভিড়।
প্রতি বছর ভালোবাসা দিবস এলেই লাল গোলাপের চাহিদা বেড়ে যায়। ফুলের দোকানগুলোয় সকাল থেকেই ছিল উপচে পড়া ভিড়। ফুল বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর লাল গোলাপের চাহিদা আরও বেশি।
ফুল বিক্রেতা হাসান মিয়া বলেন, “লাল গোলাপ ভালোবাসার প্রতীক। সবাই তাদের প্রিয়জনকে গোলাপ দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে চায়। আজকের দিনে আমাদের বিক্রিও বেড়ে যায় কয়েকগুণ।”
ভালোবাসা দিবসে মানুষ তাদের মনের কথা প্রিয়জনকে জানাতে চায় বিভিন্ন উপহার ও বার্তার মাধ্যমে। চকলেট, কার্ড, সফট টয়, এবং ফটো ফ্রেমের মতো উপহার সামগ্রীর দোকানগুলোতেও ছিল প্রচুর ভিড়।
অনেকে আবার ডিজিটাল কার্ড ও ভিডিও মেসেজ তৈরি করে তাদের প্রিয়জনকে পাঠাচ্ছেন। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে চলছে শুভেচ্ছা ও ছবি শেয়ারের হিড়িক।
ভালোবাসা দিবসের জনপ্রিয় বার্তা
“তুমি আমার পৃথিবী। শুভ ভালোবাসা দিবস।”
“ভালোবাসা মানেই একসাথে হাসি-কান্না ভাগ করে নেয়া। সবসময় তোমার পাশে আছি।”
“প্রতিদিন তোমাকে ভালোবাসি, কিন্তু আজ একটু বেশি!”
“ভালোবাসার কোনো দিন নেই, তবে আজকের দিনটাকে তোমার জন্য বিশেষ করলাম।”
“তোমার হাসি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। শুভ ভালোবাসা দিবস!”
শহরের বিভিন্ন পার্ক ও রেস্তোরাঁতে ছিল বিশেষ সাজসজ্জা ও আয়োজন। রোমান্টিক গান বাজিয়ে পরিবেশকে আরও ভালোবাসাময় করে তোলা হয়েছে। অনেক রেস্তোরাঁয় ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বিশেষ ছাড় ও মেনুর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

পার্কে ঘুরতে আসা এক দম্পতি বলেন, “আজকের দিনটা আমাদের জন্য বিশেষ। প্রতিবছর আমরা একসঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করি।”
ভালোবাসা দিবসের উৎপত্তি নিয়ে নানা গল্প ও কিংবদন্তি প্রচলিত। এটি মূলত সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামে এক খ্রিস্টান সাধুর স্মৃতিরক্ষার্থে উদযাপিত হয়। ভ্যালেন্টাইন প্রেমের প্রতীক হিসেবে পরিচিত, কারণ তিনি প্রেমিক-প্রেমিকাদের মধ্যে ভালোবাসার বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের তরুণ সমাজের মধ্যে ভালোবাসা দিবসের উদযাপন দিনে দিনে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে এ দিনটি উদযাপন আরও সহজ ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
ভালোবাসা দিবস উদযাপন করতে গিয়ে যেন কেউ অসচেতন আচরণ না করে, এ বিষয়ে পুলিশ ও প্রশাসন বিশেষ নজরদারি করছে। নিরাপদ ও সুস্থ ভালোবাসার বার্তা ছড়িয়ে দিতে প্রশাসনও বিভিন্ন প্রচারণা চালাচ্ছে।
ভালোবাসা দিবস হলো প্রিয়জনকে ভালোবাসা জানানোর দিন। তবে ভালোবাসা শুধু এক দিনের জন্য সীমাবদ্ধ নয়—প্রতিদিনই ভালোবাসা প্রকাশের চেষ্টা করা উচিত। তাই আসুন, ভালোবাসা দিবসকে ভালোবাসার উদযাপনের পাশাপাশি শান্তি ও সৌহার্দ্যের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করি।
আপনার মতামত লিখুন :