সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নে গরু ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চলা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
কীভাবে সংঘর্ষের সূত্রপাত?
স্থানীয়রা জানান, শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আস্তমা গ্রামের আলগা বাড়ির কৃষক বজলু মিয়ার গরু কামরুপদলং গ্রামের কৃষক সুরুজ মিয়ার জমির ধান খায়। এ ঘটনায় দুই কৃষকের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়, যা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরে এই ঘটনা দুই গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শনিবার সন্ধ্যায় কামরুপদলং গ্রামের নুরুল ইসলাম ও ইকবাল হোসেনসহ কয়েকজন আস্তমা গ্রামে গিয়ে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন। তবে রোববার সকালে উত্তেজনা পুনরায় ছড়িয়ে পড়ে এবং মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের ভয়াবহতা ও আহতদের অবস্থা
দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন।
আস্তমা গ্রামের গুরুতর আহত দু`জনকে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কামরুপদলং গ্রামের তিনজনকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
উভয় গ্রামের দাবিদাওয়া
আস্তমা গ্রামের পক্ষে আঙ্গুর মিয়া বলেন,
"গরু অবুঝ প্রাণী, সে তো বুঝে না কার জমিতে ধান খাবে। কিন্তু এ কারণে বজলু মিয়া ও তার পরিবারকে মারধর করা ঠিক হয়নি। তাই আমাদের গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।"
অন্যদিকে কামরুপদলং গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন,
"আমরা চেয়েছিলাম গ্রাম্য সালিশে বিষয়টি মীমাংসা হোক। কিন্তু আস্তমা গ্রামবাসী মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের গ্রামে হামলা চালায়। ফলে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।"
পুলিশের হস্তক্ষেপ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি
সংঘর্ষের খবর পেয়ে শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম আলী দ্রুত পুলিশ পাঠান।
তিনি জানান,
"সংঘর্ষের খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পর্যন্ত কোনো গ্রেফতার হয়নি। তবে যদি কোনো পক্ষ মামলা করে, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
বর্তমান পরিস্থিতি
বর্তমানে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং দুই গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, যাতে আর কোনো সংঘর্ষ না ঘটে।
আপনার মতামত লিখুন :