পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া বন্দরের মার্চেন্টপট্টি এলাকা থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী শিবানন্দ রায় বণিক ওরফে শিবু বণিক (৭৬) কে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ তিন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপহরণের কাজে ব্যবহৃত একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলারও জব্দ করা হয়েছে।
পটুয়াখালী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাজেদুল ইসলাম এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, বাউফল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলামের নেতৃত্বে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে আজ শুক্রবার ঢাকার গেন্ডারিয়া, গাজীপুরের জয়দেবপুর ও বাউফলের চন্দ্রদ্বীপ এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারী হলেন বাউফল উপজেলার বড়ডালিমা গ্রামের আবদুস ছালাম সরদারের ছেলে আবদুল্লাহ আল নোমান (২২)। অন্য দুজন হলেন উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. বশার ব্যাপারীর ছেলে মো. কাওছার হোসেন (২৩) ও মতলেব হাওলাদারের ছেলে মো. বেল্লাল হোসেন (২৫)।
অপহরণের ঘটনা
গত ৩ জানুয়ারি রাত সোয়া ১০টার দিকে কালাইয়া বন্দরের মার্চেন্টপট্টি এলাকায় শিবু বণিকের দোকানের দুই কর্মচারীকে বেঁধে ৯ সদস্যের একটি ডাকাত দল পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুট করে এবং তাঁকে ট্রলারে করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে নির্জন এলাকায় নিয়ে একটি ঘরে আটকে রেখে তাঁর পরিবারের কাছে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। শিবু বণিক কালাইয়া বন্দরের একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও কয়েকটি কোম্পানির পণ্যের পরিবেশক।
অপহরণের দুই দিন পর ৫ জানুয়ারি রাত একটার দিকে উপজেলার কচুয়া গ্রাম থেকে তাঁকে উদ্ধার করে বাউফল থানার পরিদর্শক আতিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল। একই সঙ্গে অপহরণের ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে পাঁচটি দেশি অস্ত্র, সাতটি মুঠোফোন, দুই জোড়া জুতা এবং লুট করা দেড় লাখ টাকা জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত পাঁচজন হলেন ঝালকাঠি সদর উপজেলার বালিগোনা গ্রামের মাসুদ শরীফ (২৪), বাউফলের বড় ডালিমা গ্রামের মো. মিরাজ মৃধা (২০), মো. জহির (২৭), বিধান চন্দ্র মিস্ত্রি (২২) এবং ভোলার দক্ষিণ আইচার চর পাচুকিয়া গ্রামের এক কিশোর।
অপহরণের মূল কারণ
পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃতরা ডাকাতি ও অপহরণের কথা স্বীকার করেছেন। তারা স্বল্প সময়ে ধনী হওয়ার লোভে পরিকল্পিতভাবে এই অপহরণ এবং ডাকাতি করে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, গ্রেপ্তার মাসুদ শরীফ ফ্রেশ কোম্পানির বাউফল অঞ্চলের বিক্রয় প্রতিনিধি ছিলেন। অপহৃত ব্যবসায়ী শিবানন্দ রায় ফ্রেশ কোম্পানির পরিবেশক হওয়ায় মাসুদ তাঁর বিপুল সম্পদের কথা জানতেন। দ্রুত কোটিপতি হওয়ার লোভে তিনি আবদুল্লাহ আল নোমানের সঙ্গে পরিকল্পনা করে ব্যবসায়ী শিবানন্দের দোকানে ডাকাতি ও অপহরণের ছক কষেন।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত অপহরণের ঘটনায় নয়জনের মধ্যে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিগগিরই বাকি একজনকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :