দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বকরা গণত্রাণ কর্মসূচির টাকার হিসাব স্বরূপ পূর্ণাঙ্গ অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এই কর্মসূচিতে মোট আয় হয়েছে ১১ কোটি ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকা, যার মধ্যে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ২০৭ টাকা। বর্তমানে দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে ৯ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ২১৩ টাকা।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। পি কে এফ আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরী চার্টার্ড অ্যাকাউন্টের পার্টনার এবং আন্দোলনের অডিটর গোলাম ফজলুল কবির এই অডিট ঘোষণা করেন।
আয়ের উৎস:
নগদ পাওয়া: ৯ কোটি ৮৫ লাখ ১৫ হাজার ৭২৫ টাকা।
ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাওয়া: ৭৮ লাখ ৫৭ হাজার ২১৬ টাকা।
মোবাইল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে পাওয়া: ৯৯ লাখ ৪৪ হাজার ৩৬৯ টাকা।
ডলার, স্বর্ণ, প্রাইজবন্ড ও অন্যান্য জিনিস বিক্রি থেকে পাওয়া: ৬ লাখ ৬৭ হাজার ১১০ টাকা।
মোট আয়: ১১ কোটি ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকা।
ব্যয়ের খাত:
রিলিফ কেনা: ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯২ হাজার ১৩০ টাকা।
অন্যান্য সংগঠনকে ডোনেশন: ১২ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা।
পরিবহন খরচ: ৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।
স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য খরচ: ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৯৭ টাকা।
প্যাকেজিং পণ্য কেনা: ১১ লাখ ২৪ হাজার ৯৪০ টাকা।
অন্যান্য খরচ: ৩ হাজার ১২০ টাকা।
মোট ব্যয়: ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ২০৭ টাকা। বর্তমানে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা আছে ৯ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ২১৩ টাকা।
গোলাম ফজলুল কবির জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে কিছু টাকা নিয়েছিলেন, তবে পরে তা পুনরায় সংগঠনের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়া শেষ করে আয়-ব্যয়ের পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রকাশ করতেই কিছুটা দেরি হয়েছে।
আয়-ব্যয়ে কোনো গরমিল ছিল কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমরা এমন কোনো কিছু পাইনি যা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। তাদের হিসাব পুরোপুরি স্বচ্ছ ছিল।"
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ৪ তারিখ ত্রাণ কার্যক্রম স্থগিত করার পরও কিছু টাকা যুক্ত হয়েছে। আগে চেক ক্যাশ করা সম্ভব হয়নি, কিন্তু পরে অ্যাকাউন্ট তৈরি হলে সেগুলো ক্যাশ করা হয়। কিছু গহনা ও স্ক্র্যাপ বিক্রির মাধ্যমে পাওয়া অর্থ যোগ করা হয়েছে। এছাড়া, পাওয়া কিছু কয়েন গোনা না যাওয়ায় বিলম্ব হয়। সব মিলিয়ে পূর্ণাঙ্গ অডিট প্রকাশে বিলম্ব ঘটে।
সমন্বয়ক লুৎফর রহমান বলেন, "এই তহবিল থেকে ৮ কোটি টাকা সরকারের ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পুনর্বাসন কার্যক্রমে ব্যয় করা হবে, এবং বাকি অর্থ দিয়ে উত্তরবঙ্গে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে, যা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।"
সূত্র: ইত্তেফাক
আপনার মতামত লিখুন :